ডেস্কঃ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বোমা বিস্ফোরণের খবর নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। বৃহস্পতিবার পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি এক টুইট বার্তায় এই তথ্য জানান।
জন কিরবি বলেন, ‘আমরা কাবুল বিমানবন্দরের কাছে এক বিস্ফোরণ ঘটার তথ্য নিশ্চিত করেছি। তবে এতে হতাহতের পরিমাণ এখনো অস্পষ্ট রয়েছে। সুযোগমত আমরা বিস্তারিত তথ্য জানাবো।’
এর আগে বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও আরো কয়েকটি দেশ সতর্কবার্তা জারি করে।
সতর্কবার্তায় উগ্রবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্থানীয় ইসলামিক স্টেট অব খোরাসান প্রভিয়েন্স (আইএসকেপি) বোমা হামলা চালাতে পারে বলে দেশগুলো নিজ নিজ নাগরিকসহ আফগানদের বিমানবন্দর থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়।
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশটিতে অবস্থান করা বিভিন্ন দেশের নাগরিক ও বিপুল সংখ্যক আফগান নাগরিক দেশত্যাগের জন্য কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানব্ন্দরে ভিড় করে।
১৪ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো এক লাখের বেশি বিদেশী নাগরিক ও আফগানকে দেশটি থেকে বের করে নিয়ে গেছে।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার জেরে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় মার্কিন বাহিনী। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রসজ্জ্বিত মার্কিন সৈন্যদের হামলায় আফগানিস্তানের তৎকালীন তালেবান সরকার পিছু হটে।
তবে একটানা দুই দশক যুদ্ধ চলে দেশটিতে।
দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে দেশটি থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় ওয়াশিংটন। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।
চুক্তি অনুসারে ক্ষমতাসীন থাকা মার্কিন সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের সমঝোতার জন্য তালেবান চেষ্টা করলেও দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্যে পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাতে শুরু করে তালেবান। মে থেকে অভিযান শুরুর পর সাড়ে তিন মাসের মাথায় ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের অধিকার নেয় তালেবান যোদ্ধারা।
কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য দেশটির বিপুল সংখ্যক নাগরিক কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিড় করে। বিমানবন্দরের ভিড়ে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় প্রায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সূত্রে জানা যায়।
সূত্র : আলজাজিরা ও বিবিসি