অবশেষে বুধবার থেকে খুলছে সবকিছু। তবে এবারো বন্ধই থাকছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রতিরোধে সরকারের আরোপিত লকডাউন বা বিধিনিষেধ উঠে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে খুলে দেয়া হচ্ছে সবকিছু। গতকাল রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধই থাকছে সব ধরনের স্কুল-কলেজ।
এদিকে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বেসরকারি স্কুল কলেজ ও কিন্ডারগার্টেন পরিচালক/ মালিকদের দাবি স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি সবকিছু খুলে দেয়া হয় তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া যেতে পারে। অন্যথায় দেশের চার কোটি শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে আরো অনিশ্চতয়তার মধ্যে পড়বে। এর আগে একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। কিন্ডারগার্টেন মালিকরাও সরকারের কাছে একাধিকবার এ বিষয়ে লিখিতভাবে এবং সংবাদ সম্মেলন করেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
অবশ্য শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠান মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে গত শনিবার শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেছেন, আমরা আরো কিছু দিন সময় নিতে চাই। বিশেষ করে তিনি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি শেষে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন। উপমন্ত্রী তার বক্তব্যে চলমান ছুটি শেষে অর্থাৎ আগামী মাসের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যায় কি না তখনকার করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই ছুটি আছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত হলো, আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার পর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু করা হবে।
শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য হলো বর্তমানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এর আগে কয়েকবারই বলেছেন শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার পরই খুলে দেয়া হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রস্তুতকৃত তালিকা অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এখন টিকা দেয়া শুরু হয়েছে, সে কারণে চলমান ছুটির পর তাদেরকে আবাসিক হলে এবং ক্লাসেও ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হতে পারে।
শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ হাজার, চিকিৎসাশিক্ষার পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর প্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীকে শিগগিরই টিকা দেয়া শুরু হবে।
অন্যদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রাইভেট/ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য টিকা দেয়া শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। একই তালিকা ইউজিসিতেও পাঠানো হবে।