অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আবারো দারুণ জয় বাংলাদেশের

Slider খেলা


খেলাঃ ব্যাটে-বলে সমান পারদর্শিতা। ফিল্ডিংয়েও থাকলো শিল্পের ছোয়া। সব মিলিয়ে পেশাদারিত্বের দারুণ উপস্থাপনা। আর তাতেই প্রবল প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়া ধরাশায়ী।

প্রথম ম্যাচে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে, দ্বিতীয় ম্যাচে সেখানে কম। বরং দাপুটে ও আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বর এক বাংলাদেশকেই দেখা মিলল। দারুণ ধারাবাহিকতায় নিজেদের জাত চেনালেন মাহমুদউল্লাহরা। অজিদের এক প্রকার উড়িয়েই দিলেন টাইগাররা।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-০তে এগিয়ে স্বাগতিকরা।

নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার সাথে টানা দুটি ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। ওয়ানডে ও টেস্টে জয় একটি করে। টি-টোয়েন্টিতে জয় এল দুটি, পরপর দুই দিনে।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে সাত উইকেটে মাত্র ১২১ রান করে অস্ট্রেলিয়াা। যা তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। লক্ষ্য তাড়ায় ৮ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। উইকেট হারাতে হয় ৫টি।

সহজ জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা উইকেট পতনের মধ্য দিয়ে। প্রথম দুই ওভার খেলে দিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তৃতীয় ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে সৌম্য সরকার টিকলেন কেবল দুই বল। মিচেল স্টার্কের প্রথম বল কাভারে ড্রাইভ করেছিলেন সৌম্য। পরের বলটি ছিল স্টাম্পে। জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্রস ব্যাটে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে ছোঁয়াতে পারেননি। এলোমেলো হয়ে যায় স্টাম্প।

দুই বলে শূন্য রানে ফিরেন সৌম্য। পরের তিন বলে তিনটি বাউন্ডারি মারেন নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান। পরের ওভারে আউট মোহাম্মদ নাঈম। হেজলউডের বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। জায়গায় দাঁড়িয়ে লেগে খেলার চেষ্টায় একটু নিচু হওয়া বলের নাগাল পাননি বাঁহাতি এই ওপেনার। উপড়ে যায় স্টাম্প। ১৩ বলে ৯ রান করে ফেরেন তিনি।

এরপর হাল ধরেন সাকিব ও মেহেদী। দুজনে যোগ করেন ৩২ বলে ৩৭ রান। অবশ্য একবার রিভিউ নিয়ে বাঁচেন সাকিব। অ্যাশটন অ্যাগারের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আউট দিয়েছিলেন।

বাঁহাতি স্পিনারের বল পা বাড়িয়ে খেলেছিলেন তিনি। কিন্ত ব্যাটের কানা ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার জোরালো আবেদনে সাড়া দিলে সাথে সাথে রিভিউ নেন সাকিব। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, একটুর জন্য লেগ স্টাম্প মিস করত বল! বেঁচে যান সাকিব। এই ওভারেই লং অফে ক্যাচের মতো দিয়ে বেঁচে যান মেহেদি হাসান। ছুটে এসে একটুর জন্য বলের নাগাল পাননি মিচেল স্টার্ক। সাকিবের রান তখন ১৭।

দলীয় ৫৮ রানে অবশ্য বিদায় নিতে হয় সাকিবকে। টাইয়ের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তারকা এই অলরাউন্ডার। ১৭ বলে চারটি চারে ২৬ রান করেন তিনি। পরের ওভারে বিপদ বাড়ান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। অ্যাগারের বলে ব্যাটিং ইনসাইডএজ হয়ে ফেরেন তিনি। ৪ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

মেহেদী ও আফিফ তখন ক্রিজে। নিজের দ্বিতীয় বল মোকাবিলাতেই আউট হতে যাচ্ছিলেন আফিফ। মিচেল মার্শের এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়ে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান আফিফ। ফুল লেংথ বল ব্যাটে খেলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর নেন রিভিউ। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে, বল পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে।

আফিফ বাঁচলেও একটু পরই নিজের ভুলে বিদায় নেন মেহেদী। ছক্কা মারার পর শান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। হঠাৎ করেই যেন খেই হারালেন। অকারণে তেড়েফুড়ে মারতে গেলেন অ্যাডাম জ্যাম্পাকে। লেগ স্পিনারের বলে লাইন মিস করে হন স্টাম্পড। ২৪ বলে এক ছক্কায় ২৩ রান করেন মেহেদি। ১৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ৭১।

ক্রিজে আফিফ হোসেনের সঙ্গী তখন নুরুল হাসান সোহান। এই জুটি আর বিপদ বাড়তে দেননি। নান্দনিক ব্যাটিংয়ে দলকে দারুণ জয় উপহার দেন দুজন। এই জুটিতে আসে ৪৪ বলে ৫৬ রান।

৩১ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ হোসেন। ২১ বলে ২টি চারে ২ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল হাসান সোহান। এদিন বল হাতে এককভাবে কোন অস্ট্রেলিয়ান বোলার আধিপত্য দেখাতে পারেননি। স্টার্ক, হেজলউড, অ্যাগার, জাম্পা ও টাই একটি করে উইকেট নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *