হিমেল মিঠুন রনিদের এই আড্ডা আর কতদিন চলবে ?

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

রাতুল মন্ডল নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হিমেলদের বাড়ির পিছনে সারিবদ্ধ ভাবে বসে মোবাইল ফোন হাতে ফ্রি ফায়ার পাবজি গেম খেলছেন ছয় শিক্ষার্থী। মিঠুন, রনি, আরিফ, সোহেল, আশিক, মনোয়ার। ওরা সবাই বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী। গেম খেলায় এতটায় মনোযোগী তাদের পাশ কে কখন হেঁটে যাচ্ছে তাও লক্ষ নেই তাদের। ধারণা করা যায় তাদের পাশে বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে গেলেও তাদের নজর অন্য দিকে যাবে না। এতটাই আসক্ত ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমে। খুব কাছ থেকে মোবাইল ফোনে ছবি উঠানোর পর কথা হয় এই ছয় শিক্ষার্থীর সাথে।
মিঠুন দাস স্থানীয় একটি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। কলেজ বন্ধ থাকায় সময় কাটানোর জন্য হাতে তুলে নিয়েছে মোবাইল ফোন। ফ্রি ফায়ার ও ফাবজি গেম খেলে সময় কাটায় নিয়মিত। কলেজ বন্ধ থাকায় পড়ার টেবিলে মন বসে বলে জানায় সে। স্কুল পড়ুয়া রনি জানায়, কি করবো সারাদিন ঘরের চার দেয়ালে বন্দী থাকতে ভালো লাগে না। তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে আসছি। স্কুল শিক্ষার্থী মো. আশিক মিয়া মুচকি হাসি দিয়ে জানায়, লেখাপড়া তো করছি। জানতে চাইলে মোবাইল ফোনের ফ্রি ফায়ার গেম দেখিয়ে দিলো। পাশ্ববর্তী গ্রাম থেকে মো. আরিফ এসে যোগ দেয়া নিয়মিত ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম খেলায়। সকাল ৯টায় এসেছেন মিঠুনদের বাড়ির পাশে। সে জানায় কোন দিন দুপুরে বাড়ি যাওয়া হয় আবার কোন দিন যাওয়া হয় না। একই বক্তব্য অপর দুই স্কুল শিক্ষার্থী মো. মনোয়ার হোসেন ও মো.সোহেল রানার।

বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে মিঠুনের মায়ের সাথে কথা হয় তিনি জানায়, ছেলেকে বার বার নিষেধ করার পরও সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে বসে থাকে। পড়ার টেবিলে বাসাতে পারিনা ছেলেকে। কলেজ খোলা থাকার সময় এত বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো না। এখন সারাক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। স্থানীয়রা জানায়, বর্তমানে ছেলেরা দল বেঁধে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে লুকিয়ে নির্জন এলাকায়, কখনও ঘরের দরজা বন্ধ করে গেম খেলে সময় পার করছে। বিকেল হলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে বটগাছের নিতে মধ্য রাত পযন্ত চলে তাদের মোবাইল গেম। স্থানীয়রা মনে করেন দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুল, কলেজ, খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের এই নেশা থেকে ফিরিয়ে আনা উচিত। বরমী ইউপি চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গেমের প্রতি তীব্র আসক্তির কারণে শিক্ষার্থীরা মা, বাবা, এমনকি সমাজের কারোই কথা শুনছে না। এ ধরনের ভিডিও গেম এখনই বন্ধ করা না গেলে, আমাদের চরম মূল দিতে হবে। সমাজে সৃষ্টি সংঘাত, চুরি-ডাকাতিসহ অসামাজিক কার্যকলাপ।

গাজীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোতাহার হোসেন খান বলেন, বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সময় হাতে পেয়েছে। যার ফলে ওরা বিভিন্ন ভিডিও গেমে আসক্ত হচ্ছে। তিনি আরোও বলেন, এসবের ভিডিও গেমের প্রতি আসক্তিতে তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। তাই শিক্ষার্থীরা যেকোনো অপরাধের সাথে নিজেদের জরিয়ে নেয়ার প্রবনতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তিনি মনে করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর শিক্ষার্থীর আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *