হয়রানির শিকার ধারাগুলো সংশোধন করা যেতে পারে

Slider বাংলার মুখোমুখি


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যেসব ধারার জন্য সংবাদকর্মী ও সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেগুলো সংশোধন করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এজন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। মানবজমিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, বর্তমানে যে ডিজিটাল আইনটি আছে এর কতিপয় ধারায় নাগরিক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ আইনটি প্রয়োগে কিছু ধারা অস্পষ্টতার কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমার প্রস্তাব হচ্ছে যারা ডিজিটাল আইনটা বাতিল চাচ্ছে তাদের দাবিটা যুক্তিযুক্ত নয়। বরং ডিজিটাল আইনের যে ধারাগুলোর জন্য মানুষ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেগুলো পুনঃবিবেচনায় এনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে আইনটাকে হালনাগাদ করে ফেলা। আইন, স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হোক।

তারা দ্রুততার সঙ্গে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংশোধনী গ্রহণ করবে। ইনু বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যারা গ্রেপ্তার হয়ে আছেন তাদের দিনের পর দিন আদালত জামিন দিচ্ছে না। এই জায়গাটা আদালতের বিবেচনায় নেয়া উচিত? কারণ সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক যারা আটক আছে তারা তো দেশ থেকে পালিয়ে যাবে না। সুতরাং তাদের জামিন না দিয়ে আটকে রাখার কোনো যুক্তি নেই। যেখানে খুনের মামলার আসামি জামিন পায়, হাজার কোটি টাকার ব্যাংক চুরির মামলার আসামি জামিন পায়, যেখানে ধর্ষণকারী জামিন পায়, সেখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাদের আটক করা হয়েছে তারা জামিন পায় না। আমি চাই তাদের জামিন দিয়ে বিচার করা হোক এটাই আমার পরামর্শ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের যে দাবি উঠেছে এ প্রসঙ্গে সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সমাজ প্রতিদিন প্রসারিত হচ্ছে। ডিজিটাল সমাজ এখন বাস্তবতা। ডিজিটাল সমাজে এখন ব্যবসা-বাণিজ্য, লেখাপড়া, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা, বিনোদন, গণমাধ্যম সব চলে আসছে। ডিজিটাল সমাজের ভেতরে এখন রাষ্ট্র আছে, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নারী-শিশু আছে, আরো আছে ১৬ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন। সাইবার অপরাধীরা মানুষের ক্ষতি করছে নারী শিশুদের চরিত্র হরণ করছে। এমনকি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও চুরি করছে। সাইবার অপরাধীদের এইসব আক্রমণের ধাক্কাটা অব্যাহত আছে। আবার অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে মানুষকে বিভিন্নভাবে ঠকানো হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে ডিজিটাল সমাজের সুরক্ষার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটা প্রয়োজনীয় আইন। যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের কথা বলছে তারা ডিজিটাল সমাজের সুরক্ষা কীভাবে দেবে সে কথা বলেনি। ডিজিটাল সমাজে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দরকার। কারান্তরীণ অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু প্রসঙ্গে জাসদ সভাপতি বলেন, কারাগারে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু দুঃখজনক। তদন্ত রিপোর্টে যদি অস্বাভাবিক কিছু হয়ে থাকে তার প্রতিকার রাষ্ট্রকে করতে হবে। তা না হলে রাষ্ট্রই দায়ী থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *