ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন গ্রেফতার-১

Slider নারী ও শিশু

ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মা ও মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। – ছবি : নয়া দিগন্ত
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদারের লোকজন এক বিধবা ও তার স্কুলছাত্রী মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করেছে। এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতের নাম সবুজ (৪০)। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাজপুর গ্রামের মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে।

নির্যাতনের শিকার পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাজপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ প্রায় পাঁচ বছর আগে মারা যান। তার স্ত্রী মমতাজ বেগম (৩০) মেয়ে মাহবুবা আক্তার ঝুমাকে (১৬) নিয়ে স্থানীয় বন বিভাগের জমিতে বসবাস করেন। মমতাজ স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন এবং তার মেয়ে ঝুমা মনিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। স্বামীর অবর্তমানে তাদের সংসারে অভাব-অনটন সর্বদা লেগেই থাকতো। সংসারের অভাব অনটন থেকে মুক্তি পেতে মমতাজ সম্প্রতি স্থানীয় এক ‘জিনের বাদশা’র খপ্পরে পড়েন।

সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে দেবে এমন প্রতিশ্রুতিতে মমতাজ বেগমের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে জিনের বাদশা। এতে সম্মতি জানিয়ে জিনের বাদশার ওই টাকা যোগাড় করতে মমতাজ স্থানীয় কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ গ্রহণ করেন। সুদে নেয়া ঋণের টাকা ওই জিনের বাদশার হাতে দেন।

কিন্তু দীর্ঘ সময়েও সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসেনি। বরং ঋণের টাকা তিনি পরিশোধ করতে না পারায় মমতাজ দিশেহারা হয়ে পড়েন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ না করেই মেয়েকে নিয়ে মমতাজ এলাকা ত্যাগ করার পরিকল্পনা নিচ্ছেন- এমন সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার পাওনাদারদের লোকজন মমতাজের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে তারা পাওনা টাকা পরিশোধের দাবিতে মমতাজ ও তার যুবতী মেয়েকে বাড়ির পাশের গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতনের শিকার মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে।

কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, এ ঘটনায় মমতাজ বেগম বৃহস্পতিবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় আটজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী সবুজকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *