মিয়ানমারে জান্তা সরকারের কারফিউ জারি, সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা

Slider সারাবিশ্ব


মিয়ানমারের নতুন সামরিক শাসকরা তাদের ক্ষমতা দখলের বিরোধিতাকারীদের দমন করার অভিসন্ধি সোমবার প্রকাশ করেছেন। দেশটির সবচেয়ে বড় দুই শহরে শান্তিপূর্ণ গণপ্রতিবাদ তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে রাজধানী নেপিদোতে শতাধিক বিক্ষোভকারীর ওপর পুলিশের জলকামান নিক্ষেপের পর এ বিধিনিষেধের আদেশ এসেছে।

দেশের দুই বৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুন ও মানডালায় পাঁচজনের অধিক ব্যক্তির জড়ো হওয়া এবং মোটরযান নিয়ে মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সাথে রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত আরোপ করা হয়েছে কারফিউ। এই দুটি শহরে শনিবার থেকে হাজার হাজার মানুষ আন্দোলন করে আসছেন।

বিক্ষোভকারীরা সোমবার ইয়াঙ্গুনের বড় একটি মোড়ে সমাবেশ করেন। তারা প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে তিন-আঙুল স্যালুট প্রদর্শন এবং বিভিন্ন দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। একই সাথে দেশের উত্তর, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

নতুন বিধিনিষেধের আদেশ শহর ধরে ধরে জারি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে নতুন এ বিধিনিষেধ অন্যান্য এলাকায়ও ছড়িয়ে দেয়া হবে। দেশটির সেনাবাহিনী বলছে, লোকজনের আইনের শাসনের জন্য ক্ষতিকর বেআইনি কার্যক্রম চালানোর জবাবে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।

রাজধানী নেপিদোতেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ হচ্ছে। এ শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে অনেক বেসামরিক সরকারিকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্য রয়েছেন। পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের পর শুধুমাত্র সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গণতন্ত্রের স্বাদ নিতে শুরু করা মানুষের মাঝে যে কীধরনের রাগ বিরাজ করছে তা নেপিদোর বিক্ষোভে প্রতিফলিত হচ্ছে।

ইয়াঙ্গুনের এক আন্দোলনকারী দাও মোই বলেন, ‘আমরা সামরিক জান্তা চাই না। আমরা কখনো এই জান্তাকে চাইনি। কেউ একে চায় না। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সবাই প্রস্তুত।’

মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নিবাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের সংসদে বসার দিন সামরিক অভ্যুত্থান হয়। সামরিক জেনারেলরা বলছেন, ভোটে জালিয়াতি হয়েছিল। তবে দেশটির নির্বাচন কমিশন এ দাবি খারিজ করে দেয়।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সোমবার প্রথমবারের মতো বিক্ষোভ হওয়ার কথা স্বীকার করে দাবি করেছে, তারা দেশের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছেন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশন এমআরটিভিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি পাঠ করে বলা হয়, ‘শৃঙ্খলা না থাকলে গণতন্ত্র ধ্বংস হতে পারে। রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা, জননিরাপত্তা ও আইনের শাসন লঙ্ঘনকারী কার্যক্রম রোধে আমাদের আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তবে, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে নেয়া সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো সোমবার রাতে টেলিভিশনে প্রচারিত ২০ মিনিটের এক ভাষণ দেন। এ সময় বিশৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করেননি।

সূত্র : ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *