মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতারের পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনীর সাবেক জেনারেল মিন্ট সুর নাম ঘোষণা করেছে মিয়ানামারের সেনাবাহিনী। পাশাপাশি দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বেসামরিক প্রশাসনের সাথে সামরিক বাহিনীর কয়েক দিনের দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে সামরিক বাহিনী সোমবার এই অভ্যুত্থান করে।
সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন মাইয়াওয়াদ্দি টিভিতে ঘোষণা করা হয়, ২০০৮ সালের সংবিধানের ৪৪৭ ধারার অধীনে মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সু দেশজুড়ে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
সেনাবাহিনীর এক বিবৃতি পাঠ করে ওই টিভি ঘোষণায় বলা হয়, ‘দেশের আইনসভা, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ ২০০৮ সালের সংবিধানের ৪১৮ ধারার অধীনে সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ অধিনায়কের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, যতক্ষণ না ভোটার তালিকা নিরীক্ষণে ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
মিন্ট সু এর আগে অং সান সুচির নেতৃত্বের ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের অধীন সরকারে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন।
২০১৮ সালের মার্চে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট থিন চাওয়ের পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মিন্ট সু।
গত বছরের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে দ্বিতীয়বারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের মতো দ্বিতীয় নির্বাচনেরও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
নির্বাচনে এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও এই ফলাফলকে স্বীকৃতি না দেওয়ার ঘোষণা দেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সমর্থিত বিরোধী দলটি। ভোট সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়নি, তাই নতুন করে আবারও ভোটের আয়োজন করার জন্য সেসময় নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানায় তারা।
এ দিকে সোমবার নব-নির্বাচিত সংসদের প্রথম বৈঠক হবার কথা থাকলেও নির্বাচনে মতবিরোধের জেরে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করে।
সূত্র : ইরাবতি, এএনআই