শীতে কাহিল তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ

Slider রংপুর

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ শীতের তীব্রতায় কাহিল হয়ে পড়েছে তিস্তা চরাঞ্চলের হাজার হাজার ছিন্নমুল পরিবার। শ্রমজীবী মানুষ তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশাকে উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছেন।সড়কে লাইট জালিয়ে চলছে যানবাহন।ফুটপাত ও পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেড়েছে নিম্নআয়ের মানুষদের ভিড়।হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

কনকনে শীত,কুয়াশাচ্ছন্ন চারদিক সাথে যুক্ত হয়েছে হিমেল হাওয়া। তীব্র এ শীতে জড়োসড়ো অবস্থা। সন্ধ্যা হতেই ঘরমুখো হচ্ছেন মানুষ। গত কয়েকদিন ধরে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে উত্তর সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে।বুধবার দুপুরে সূর্যের দেখা মেলায় স্বস্তি বোধ করেছেন মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে লালমনিরহাট জেলার তাপমাত্রা ছিল ১৩.২৬ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ভ্যান চালক মালেক মিয়া জানান, শীতের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো পেটে ভাত যাবে না। পরিবারের সদস্যদের খাবার যোগাড় করতেই ভ্যান নিয়ে বের হয়েছি।

রিকশা চালক বেলাল হোসেন জানান, পেটের দায়ে তীব্র শীতেই রিক্সা নিয়ে বেড় হয়েছি। তবে যাত্রী না থাকায় দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৭৫ টাকা আয় হয়েছে। এভাবে দিন শেষে যা আয় হবে তা দিয়েই চলবে সংসার।

তিস্তা গোবর্দ্ধন চরের রফিকুল, সোলেমান গনি ও নেছার আলী বলেন, শীতের সময় চরাঞ্চলে ঘরেও থাকা কষ্টকর। বাঁশ ও ভাঙা বেড়া দিয়ে শীত ঘরে ঢুকে বিছানাও হিম হয়ে যায়। ঠান্ডার কারণে ঘুমও হয় না। সকালেই আবার এই ঠান্ডাতেও পেটের দায়ে মাঠে কাজ করতে হয়।

জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি গ্রামের শাহিনা, আবুল হাসেম ও মইনুদ্দিন বলেন, এমন ঠান্ডা কখনই দেখি নাই। সারা শরীর শুধু কাঁপছে। গাছের পাতা ও খড় কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছি।

এদিকে শীতার্ত মানুষদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীত বস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ অব্যহত রয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বলের পাশাপাশি শিশুদের জন্য সোয়েটার বিতরণের দাবি জানিয়েছেন শীতার্ত ছিন্নমুল মানুষজন।

তীব্র শীতের কারণে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’গুলোতে ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত সর্দ্দি-জ্বর, কাশি, নিউমেনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে সকল হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, সরকারিভাবে ৪০ হাজার ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে ১০ হাজার মিলে মোট ৫০ হাজার পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শিশুদের জন্যও সোয়েটারের বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত বিতরণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *