বামী হারানোর দেড় বছরেও হয়নি বিধবা ভাতার কার্ড,ভাঙ্গা ঘরে রাত কাটে ফাতেমার

Slider লাইফস্টাইল

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ মোর আড়াই শতক ভুই (জমি)। ভাল একনা ঘর নাই।ছাপরা একনা ভাঙ্গা টিনের চালা।ওকনা চালায় তিনকোনা মেয়ে নিয়া থাকোং। আইতে ঘুমির পাং না, বৃষ্টির দিনোত চালা দিয়া পানি পড়ে।ঘরের কাঁথা-বালিশ সউগ(সব) ভিজে যায়। শীতের দিনোত বাতাস ঢোকে ঘরের ভেতরোত।স্বামী মরছে দেড় বছর হয় বিধবা ভাতার কার্ড ও পাং নাই।

মুই তো মোর কষ্টের কতা(কথা) চেয়ারম্যান-মেম্বারের কতবার কছুং৷কাও মোর ভাতা করে দেয় নাই৷ মুই সরকার থেকে যদি একনা ঘর পানুং হয় তাইলে বাকি জীবনটা একনা ভালো করে কাটনুং হয়”।

এভাবেই নিজের কষ্টের কথাগুলো বললেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ফাতেমা বেগম (৩৭) নামে এক বিধবা নারী।

তিনি উপজেলার ৪ নং দলগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ দলগ্রাম (হাজীপাড়া) এলাকার ৬ নং ওয়ার্ডের মৃত্যু সামছুল হকের স্ত্রী।

প্রায় দশ বছর ধরে দারিদ্র্যের কষাঘাতে দূর্বিষাহ জীবনযাপন করছেন তিনি। এমন একটি জরাজীর্ণ টিনের চালায় বাস করেন অথচ সরকারী একটি ঘরের সহায়তায় এগিয়ে আসেনি কেউ। দেড় বছর ধরে স্বামী হারা হলেও এখন পর্যন্ত ওই নারীর ভাগ্যে জোটেনি বিধবা ভাতা,ভিজিডি কার্ড কিংবা মাথা গোঁজার মতো একটা সরকারী ঘর। তিন মেয়েকে নিয়ে ভাঙ্গা একটি টিনের চালায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পোহাতে হয় তার।

জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকতে সারাদিন পরিশ্রম করার পর রাতে একটু ভালভাবে ঘুমাবে, তবে সেখানেও নেই তার শান্তি। কারণ বৃষ্টি হলেই পানিতে ভরে যায় তার বিছানাপত্র। তবুও জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার তাগিদে জরাজীর্ণ ভাঙ্গা টিনের চালায় রাতভর ছটফট করে তিন সন্তানকে নিয়ে থাকতে হয় ফাতেমা কে। মুজিব বর্ষে সরকারি একটি ঘর পাওয়ার আকুতি জানান ওই বিধবা নারী।

শনিবার (৯ জানুয়ারী ) সকালে বিধবা ফাতেমা বেগমের সন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি টিনের ভাঙ্গা একটি চালায় তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে বসবাস করছেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে তার স্বামী তিন কন্যা সন্তানকে রেখে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সহায় সম্বল বলতে কিছু নেই। স্বামীর মৃত্যুর পর ৪০ দিনের মাটিকাটা কাজ করে তিন মেয়েকে নিয়ে ভাঙা একটি টিনের চালায় খুব কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। টিনের চালাটি ঝড়-বৃষ্টির দিনে যে কোন সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা। আশ্রয়স্থল যদি ঠিক না থাকে তাহলে দিনরাত পার করা খুব মুসকিল। জীবন-যাপন করার জন্য মোটামুটি ভালো আশ্রয়স্থলের একটি ঘর তার খুব প্রয়োজন। স্থানীয়দের প্রশ্ন এতদিনে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরগুলো আসলে পাচ্ছেন কারা?

ওই বিধবা নারীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার একটি গৃহ নির্মাণের ব্যবস্থা করে দিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী,জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *