দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করতে পারবে না সরকার

Slider বাংলার আদালত


ঢাকা: দুর্নীতির অভিযোগে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা কোনো মামলা সরকার চাইলেই প্রত্যাহার করতে পারবে না বলে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি

এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। গতকাল রায়ের বিষয়টি প্রকাশ পায়। শুধু তাই নয়, দুদকের করা কোনো মামলা প্রত্যাহারে সুপারিশও করতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান রায়কে যুগান্তকারী উল্লেখ করে বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে দুদকের মামলার বিষয়ে কোনো ধরনের নাক না গলানোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন উচ্চ আদালত। সরকার চাইলেও দুদকের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে পারবে না। এ নিয়ে হাইকোর্টের রায় এটাই প্রথম বলেও জানান তিনি। আসামি পক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, দুদকের মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যাহারের যে সুপারিশ করেছিল হাইকোর্ট তা বাতিল করেছেন। এখন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সরকারের অন্য কোনো দপ্তর দুদকের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে পারবে না।

দুদক নিজেও আদালতকে না জানিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে পারবে না। এটা দুদকের ২০০৪ সালের সংশোধিত আইনেই রয়েছে জানান তিনি।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ২০০৪ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্থা। এর ফলে দুদকের অনুমোদিত কোনো মামলা প্রত্যাহারে কেউ কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামির আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না সে বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
নথি থেকে জানা যায়, বিগত ১/১১ এর পর আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন ফৌজদারিসহ অসংখ্য মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী এ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেই সময় দুদকের মামলাও প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। তখন অনেক ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার হলেও দুদকের মামলায় আইনি প্রশ্ন জড়িত থাকার কারণে কোনো মামলা প্রত্যাহার হয়নি। কিন্তু ওই সময়ে সিলেটের ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৫টি টিন চুরির অভিযোগে দুদকের মামলা প্রত্যাহারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুপারিশ করে। আদালতও মামলাটি চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহারের আদেশ দেন। এ ঘটনায় ২০১৬ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের পক্ষ থেকে। আবেদনে বলা হয়, যে প্রক্রিয়ায় দুদকের মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে তা সঠিক আইন মেনে হয়নি। সে আবেদনের ওপর হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন গত বৃহস্পতিবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *