ঢাকা: দেশে অনুমোদনহীন বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেল প্রদর্শন করছে কয়েকটি বিদেশি ডিটিএইচ কোম্পানি এবং দেশীয় ক্যাবল ও ফিড অপারেটর। সরকারের অনুমতি না নিয়ে শতাধিক চ্যানেল প্রদর্শন করছে তারা। এর ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত ক্যাবল অপারেটর এবং গ্রাহকদের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তথ্য মন্ত্রণালয় এবং খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশি ও বিদেশি চ্যানেল মিলিয়ে দেশে প্রায় ১৩০টির মতো চ্যানেল প্রদর্শনের অনুমতি রয়েছে। দেশীয় চ্যানেলের বাইরে অনুমোদিত বিদেশি চ্যানেলের সংখ্যা ৯০টি। কিন্তু অনেক ক্যাবল অপারেটর ও ডিস্ট্রিবিউটর ৩০০টির বেশি চ্যানেল প্রদর্শন করছে। অর্থাৎ অনুমোদন না থাকা প্রায় ২০০টি চ্যানেল তারা দেশে প্রদর্শন করছে।
এ জন্য তাদের কোনো ধরনের জবাবদিহিতাও নেই। বাংলাদেশে প্রদর্শনের জন্য বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্স নিতে হয় যেকোনো ডিটিএইচ বা ক্যাবল ডিস্ট্রিবিউটর-অপারেটরদের। এ জন্যও নির্ধারিত লাইসেন্স ফি পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ এনালগ ও ডিজিটাল ক্যাবল অপারেটর এ অর্থ টিভি চ্যানেল কিংবা তথ্য মন্ত্রণালয়কে দেয় না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, এই ক্যাবল অপারেটররা অনুমোদনহীন বিদেশি টিভিগুলোকে যে টাকা দেয় তার মাত্র সামান্য অংশ ঘোষণা দেয়। ফলে ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদও বিপুল রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের এক মূল্যায়নে দেখা যায়- অনুমোদনহীন এবং অবৈধ চ্যানেল প্রদর্শন করে ক্যাবল অপারেটররা বছরে অন্তত ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়। এছাড়া নানা অবৈধ উপায়ে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
দেশে সম্প্রচারের অনুমোদন আছে এমন চ্যানেলগুলো অবৈধভাবে ডাউনলোড করে বেশিরভাগ ক্যাবল অপারেটর দর্শক পর্যায়ে প্রদর্শন করছে। অন্য বৈধ অপারেটরের ফিড অবৈধভাবে ডাউনলোড করে গ্রাহক পর্যায়ে প্রদর্শনের ফলে ওই বৈধ অপারেটররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় এবং ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভে ডাটা ২০১৭ অনুযায়ী, দেশে ২ কোটি ৩৬ লাখ টেলিভিশন সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ শতাংশ গ্রাহক এনালগ ক্যাবল অপারেটরদের। এক দশমিক ৭ শতাংশ ডিজিটাল ক্যাবল অপারেটর বেঙ্গল ও জাদুর। আর এক দশমিক ৩ শতাংশ দেশের একমাত্র বৈধ ডিটিএইচ সেবা প্রদানকারী আকাশের। এনালগ ও ডিজিটাল- দুই শ্রেণির ক্যাবল অপারেটরদের বেশিরভাগই অনুমোদনহীন চ্যানেল প্রদর্শন করছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান উল আলম জানিয়েছেন, অনুমোদনের বাইরে যে চ্যানেলগুলো অপারেটররা চালাচ্ছে তার একটি তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। আমরা শিগগিরই অনুমোদনহীন চ্যানেলগুলোর কিংবা যারা এগুলো সম্প্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।