ম্যারাডোনা মারা গেছেন

Slider খেলা

ডেস্ক: ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো ম্যারাডোনা আর নেই। বুধবার আর্জেন্টিনার লা প্লাতা ক্লিনিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নভেম্বরের গোড়ায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার মস্তিষ্কে একটি ব্লাড ক্লট জমাট বাঁধার পর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। জিমনাসিরের কোচ তার ৬০তম জন্মদিনের পরই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার প্রয়াণের সংবাদে বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েনোস আইরেসের সুবিধাবঞ্চিত এলাকা ভিয়া ফায়োরিতায় জন্ম ম্যারাডোনার। কিশোর বয়স থেকে নজর কাড়েন নিজের ফুটবল প্রতিভা দিয়ে। ১৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে অভিষেক হয়।
১৯ বছর বয়সে দেশের হয়ে জেতেন যুব বিশ্বকাপ। জাদুকরি বাঁ পায়ে তিনি মাতিয়েছেন বার্সেলোনা, নেপোলি, সেভিয়া ও নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ, রেসিং, জিমনাশিয়া।

তরুণ বয়সের কারণে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও ১৯৮২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে চাপান ম্যারাডোনা। ব্রাজিলের বিপক্ষে লাল কার্ড পেয়ে শেষ হয় তার আসর। তবে ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোর আসরে বলতে গেলে প্রায় একাই চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন লাতিন আমেরিকার দেশটিকে। ওই বিশ্বকাপেই ফুটবল বিশ্ব দেখেছিলেন তার ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলটি। সেই বিশ্বকাপের পরই প্রতিষ্ঠিত হয়ে ম্যারাডোনার অমরত্ব—ফুটবল মাঠে পা রাখা সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের একজন।

ক্লাব ফুটবলে নেপোলিকে দিয়েছিলেন লীগ শিরোপার স্বাদ। ইতালিয়ান এই ক্লাবে যাওয়ার আগে খেলে গিয়েছিলেন বার্সেলোনার জার্সিতে। আর ক্যারিয়ারের শেষটা করেছিলেন বোকা জুনিয়র্সে।

খেলোয়াড়ি জীবন শেষে আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। ২০০৮ সালে দায়িত্ব নিয়ে আলবিসেলেস্তেদের ডাগ আউটে দাঁড়িয়েছিলেন ২০১০ সালের বিশ্বকাপেও। সবশেষ আর্জেন্টাইন ক্লাব জিমনেসিয়ার কোচের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

দারুণ ফুটবলে যেমন নন্দিত ছিলেন, তেমনটি নিন্দিতও ছিলেন বেপরোয়া জীবনযাপনের কারণে। বিশেষ করে, কোকেন সেবন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার ফুটবল ক্যারিয়ারে। যে কারণে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে খেলাই হয়নি এই কিংবদন্তির। ১৯৯১ সালে ড্রাগ পজিটিভ হয়ে ১৫ মাস নিষিদ্ধ ছিলেন তিনি।

তবে ম্যারাডোনাকে বিশ্ব মনে রাখবে তার অসম্ভব সুন্দর ফুটবল কারুকার্যের জন্য। মাঠের সবুজ গালিচায় তার পায়ের তুলিতে আঁকা অসংখ্য মুহূর্ত ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতির পাতায় সাজানো থাকবে চিরকাল।

এই ফুটবল কিংবদন্তি আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৯১ ম্যাচে করেছেন ৩৪ গোল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *