কালো পতাকা মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা

Slider নারী ও শিশু


ঢাকা: সকাল থেকেই প্রতিবাদ, বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠে রাজধানী। ধর্ষণ-নিপীড়নের প্রতিবাদে শাহবাগ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পূর্ব নির্ধারিত কালো পতাকা ‘নিপীড়নবিরোধী ছাত্র জনতা’র ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিলে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি ও বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। পুলিশি বাধায় মিছিলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দিতে পারেনি।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে শাহবাগে জড়ো হন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।

দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। বেলা একটার দিকে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে শাহবাগ থেকে টিএসসি ঘুরে বাংলামোটরের দিকে যাত্রা করে তারা। ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন, সরকার জবাব চাই,’ ধর্ষকদের শাস্তি দাও, নয়তো গদি ছেড়ে দাও’, ইত্যাদি স্লোগান দেয় আন্দোলনকারীরা।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পৌঁছালে মিছিলের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। তাদের সামনে যেতে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের ব্যারিকেড তুলে ফেলতে উদ্যত হয় বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা লাঠিচার্জ করলে বিক্ষোভ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের একজনকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা জানান, পুলিশের হামলায় তাদের পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন, ছাত্র ইউনিয়ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আসমানি আশা, লালবাগ থানা শাখার দপ্তর সম্পাদক মাহমুদা দিপা, মোহাম্মদপুর থানার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন শুভ। আসমানি আশা ও মাহমুদা দিপাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

পুলিশি বাধার সম্মুখীন অবস্থায় বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়, ঢাকা মহানগর সভাপতি জহর লাল রায় প্রমুখ। গণ জমায়েতে বক্তব্য রাখেন কবি সাখাওয়াত আমিন, ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জহর লাল রায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আসমানি আশা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফারিয়া উলফা সৈয়দসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী, পেশাজীবী ও সংগঠক। এসময় তারা বিচারহীনতার কারণে ধর্ষণ বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন। বক্তারা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পদত্যাগের দাবি জানান। পুলিশি বাধার প্রতিবাদে সন্ধ্যা ৭টায় শাহবাগ মোড়ে মশাল মিছিল করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। এদিকে, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা। ধর্ষক ও নারীকে বিবস্ত্রকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। কেউ কেউ এ বিষয়ে আরো কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান। অনেকেই ফেসবুকের প্রোফাইল কালো করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শাস্তি দাবি করেছেন ধর্ষক ও নারী লাঞ্ছনাকারীদের প্রশ্রয়দাতাদেরও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *