বাংলাদেশের মানুষের মানসিকতা যে এতো নিচু তা আগে জানতাম না

Slider জাতীয় সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

যশোর: হলুদ বা নীল কিংবা হোক না সবুজ- এরকম রঙিন পোশাকে কনে সেজে হাতে গাঁদা ফুলের মালা আর নির্ধারিত আসনে বসে গায়ে হলুদ মাখা সে তো পুরোনো নিয়ম। বিংশ শতাব্দীর শেষ প্রান্তে ডিজিটাল যুগের মেয়েও যদি সেভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করে বিয়ের কনে হিসেবে তাহলে পরিবর্তন কি হলো। তাই নিজেকে ভিন্ন রুপে তুলে ধরতেই যশোরের মেয়ে ফারহানা আফরোজ তার বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে আজ দেশব্যাপী আলোচিত সমালোচিত। তিন কন্যা খ্যাত চিত্র নায়িকা সুচন্দা, চম্পা ও ববিতার ভাতিজি ফারহানা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে নিয়ে মোটরবাইকে যশোর শহর চক্কর দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে। চিত্রজগতের মানুষদের সংস্পর্শে বেড়ে ওঠা ফারহানা ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর ছাত্রী। আধুনিক মন মানসিকতার ফারহানা ছোটকাল থেকে ব্যতিক্রমী কিছু করার পক্ষেই বেশি আগ্রহী। আর সে কারনেই তিনি ও তার সহপাঠীরা আয়োজন করে ই্‌ েব্যতিক্রমী গায়ে হলুদর অনুষ্ঠানের।

ফারহানা আফরোজ বলেন, ‘ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার জন্যে আমি কিছুই করিনি। আমি ঢাকাতে দেখেছি, অনেক বিয়েতে বর নিজে মোটরবাইক চালিয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করছে। আমিও নিজে মোটরবাইক চালাতে পারি। ছেলেরা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে মোটরবাইক নিয়ে যেতে পারলে আমি মেয়ে হয়ে কেন পারবো না। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একটু হইচই করার জন্যই মূলত এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘যশোর শহরের পোস্ট অফিস পাড়ার একটি বিউটি পার্লার থেকে সাজসজ্জা করে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে শহরে একটি চক্কর দিয়েছি। পরে গায়ে হলুদের আসরে গিয়েছি। জাস্ট এটুকুই। কিন্তু ফেসবুকে এতো নেতিবাচক মন্তব্য আসছে যে আমি নিতে পারছি না। বাংলাদেশের মানুষের মানসিকতা যে এতো নিচু তা আমি আগে জানতাম না। অবশ্য ইতিবাচক মন্তব্য যে নেই তা আমি বলবো না। তবে সেটা অনেক কম। এসব নিয়ে আমার পরিবারে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বন্ধু বান্ধবরা নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে নেতিবাচক ম্যানশন করা হচ্ছে।’

গত ১৩ই আগস্ট ছিল ফারহানার গায়ে হলুদ। পরদিন ১৪ই আগস্ট বিয়ে। ছেলে হাসনাইন রাফি পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা। তিনি টেক্সটাইল প্রকৌশলী। ঢাকার গাজীপুরে একটি কোম্পানিতে কর্মরত। ফারহানা আফরোজ জানান, গায়ে হলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠান স্মৃতি করে রাখতেই পেশাদার ক্যামেরাম্যান দিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। বিয়ের পরে সেই ছবি ও ভিডিও বন্ধু-বান্ধবরা ফেসবুকে পোস্ট করে। এরপর থেকেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি বেশ আনন্দ পেয়েছি। আমার বাবার পরিবার ও স্বামীর পরিবারের সদস্যদের এসব নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। সমস্যা যা দেখছি তা আমার ফ্যান ফলোয়ারদের।

সবুজ রঙের পোশাক পরা এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী। সবাই নিজ নিজ মোটরবাইকে। তাদের মাঝখানে সোনালী রঙের পোশাকে একা একটি মোটরবাইকে কনে। গায়ে হলুদের পোশাকে মোটরবাইক চালানো কনের এই ছবি ও ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-ইউটিউবে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে কনের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আসরে যাওযার দৃশ্য বাংলাদেশে ব্যতিক্রম। বিষয়টা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এ ঘটনায় মানুষ ইতিবাচক- নেতিবাচক-দুই ধরণের প্রতিক্রিয়াই দেখাচ্ছেন। গায়ে হলুদের দিনে শহরজুড়ে বন্ধু-বান্ধব ও সাথীদের নিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে শোভাযাত্রা করলেন কনে। ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছেন যশোরের মেয়ে ফারহানা আফরোজ। গত ১৩ই আগস্ট তাঁর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ঘিরে এমন আয়োজন করেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারহানা আফরোজ বলেন, ‘ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার জন্যে আমি কিছুই করিনি। আমি ঢাকাতে দেখেছি, অনেক বিয়েতে বর নিজে মোটরবাইক চালিয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করছে। আমিও নিজে মোটরবাইক চালাতে পারি। ছেলেরা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে মোটরবাইক নিয়ে যেতে পারলে আমি মেয়ে হয়ে কেন পারবো না। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একটু হইচই করার জন্যই মূলত এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘যশোর শহরের পোস্ট অফিস পাড়ার একটি বিউটি পার্লার থেকে সাজসজ্জা করে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে শহরে একটি চক্কর দিয়েছি। পরে গায়ে হলুদের আসরে গিয়েছি। জাস্ট এটুকুই। কিন্তু ফেসবুকে এতো নেতিবাচক মন্তব্য আসছে যে আমি নিতে পারছি না। বাংলাদেশের মানুষের মানসিকতা যে এতো নিচু তা আমি আগে জানতাম না। অবশ্য ইতিবাচক মন্তব্য যে নেই তা আমি বলবো না। তবে সেটা অনেক কম। এসব নিয়ে আমার পরিবারে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বন্ধু বান্ধবরা নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে নেতিবাচক ম্যানশন করা হচ্ছে।’

ফারহানা জানান, সবাই নেচে-গেয়ে উদযাপন করেছি গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। আমি যেহেতু বাইক চালাতে পারি তাই বাইক চালিয়ে অনুষ্ঠান করেছি। ব্যতিক্রমী কিছু করার ভাবনা থেকেই এমন আয়োজন। এটি আমার নিজস্ব উদ্যোগে করেছি। অনেক আনন্দ করেছি বন্ধু-বান্ধব ও সাথীরা। ফারহানা আফরোজের বাড়ি যশোর শহরের মুজিব সড়কে সার্কিট হাউজের সামনে। তিনি মরহুম মিঠুর একমাত্র কন্যা। যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে মাধ্যমিক ও ২০১৩ সালে যশোরের ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যায়ন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *