বৈরুতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০০

Slider সারাবিশ্ব

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে একশ’তে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার শহরের বন্দর এলাকায় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন চার হাজারের বেশি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবন, গাড়ি, স্থাপনাসহ বিভিন্ন জিনিসও।

কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

এই বিস্ফোরণের কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এটি বড় কোনও দুর্ঘটনা বলে মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

দুইজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বন্দরের কাছে বিস্ফোরকের গুদাম আছে। সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও বলা হচ্ছে, বিস্ফোরণের গুদামেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।

বিস্ফোরণের পরপরই অনলাইনে কিছু ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। এতে বড় ধোঁয়ার কুন্ডলী এবং বাড়িঘর ধসে পড়তে দেখা গেছে। হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে আহত বহু মানুষকে।

প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বুধবার দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। এই ঘটনাকে জাতীয় দুর্যোগ বলে উল্লেখ করে তিনি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে। সিএনএন বলছে, ভয়াবহ দুটি বিস্ফোরণের পর লেবানন থেকে ১৫০ মাইল দূরের এলাকাও কেঁপে ওঠে।
লেবাননে অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই এমন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হঠাৎ আগুন দেখতে পেলাম, সেটি যে বিস্ফোরণের ঘটনা, তা বুঝিনি। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমি আর কিছু শুনতে পাইনি। এরপর দেখি কাঁচ ভেঙে গাড়ির ওপর পড়ছে। ভবন ধসে পড়ছে।

লেবাননের রেডক্রস জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পর শত শত মানুষকে হাসপাতালে নেওয়া হযেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন বলেছেন, বন্দরে ছয় বছর ধরে বন্দরে অরক্ষিতভাবে ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুদ করা ছিল। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভয়বাহ এই বিস্ফোরণের ঘটনায় বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন তিনি। দুই সপ্তাহের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণারও চিন্তাভাবনা করছেন প্রেসিডেন্ট।

বিবিসি বলছে, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও মূলত এর দুটি ব্যবহারই প্রচলিত। এর মধ্যে একটি কৃষি জমিতে, আরেকটি বিস্ফোরক হিসেবে। আগুনের সংস্পর্শে আসলে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।

বন্দরে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মজুদ কেন ছিল, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে তার জবাবদিহি চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বলেছেন, বিস্ফোরণের জন্য যারাই দায়ী হোক, তাদের চরম মাশুল দিতে হবে।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘ ট্রাইব্যুনালের রায়ের তিন দিন আগে ঘটা এই বিস্ফোরণের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। বিস্ফোরণের পর এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি তহবিলের জন্য বড় অংকের অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *