বাজেট পাসের আগেই মোবাইলে বাড়তি টাকা কাটা শুরু

Slider জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাদেশ


ঢাকা: প্রতিবছরের মতো এবারও প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনের দিন থেকে গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা কাটা শুরু করেছে দেশের মোবাইল অপারেটররা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জারি করা এক আদেশের সুযোগে তারা এ উদ্যোগ নিয়েছে। তবে অপারেটরদের এ উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।

প্রস্তাবিত বাজেট, মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের কথা বলা হয়। এর ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলা, এসএমএস পাঠানো এবং ডেটা ব্যবহারের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবার তা আরও বাড়লো। ফলে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই মোবাইল সেবায় বাড়তি হারে সম্পূরক শুল্ক কাটা শুরু করেছে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীনফোন, রবি ও বাংলালিংকের তিনজন উদ্ধর্তন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ১ শতাংশ সারচার্জ, ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং অন্যান্য কর মিলে মোট কর ৩৩.২৫ শতাংশে দাঁড়ালো। সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়ায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১০০ টাকা খরচ করে ৭৫ দশমিক শূন্য ৩ টাকার সেবা মিলবে। ২৪ দশমিক ৯৭ টাকা যাবে সরকারের পকেটে। একই যুক্তি দেখিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব এস এম ফরহাদ বলেন, বাজেট প্রস্তাবের পর এনবিআর এসআরও জারি করায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই মোবাইল সেবায় বাড়তি সম্পূরক শুল্কের ভিত্তিতে টাকা কাটছে মোবাইল অপারেটরগুলো।

তবে এ উদ্যেগের বিরোধীতা করে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহীউদ্দিন আহমেদ বলেন, আয়-রোজগারহীন গ্রাহকের উপর করের বোঝা ‘জুলুম’। বর্তমান মহামারিতে কর্মহীন গ্রাহক সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে বসে কাজকর্ম করছেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশ গ্রাহকদের নিরবিচ্ছিন্ন, দ্রুত গতির ইন্টারনেট ও সাশ্রয়ী মূল্য প্রাপ্তিতে কাজ করে যাচ্ছেন। সে সময়ে আমাদের ডিজিটাল সরকার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে টেলিযোগাযোগ সেবায় সম্পুরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, পূর্বেই এ খাতে গত ৫ বছরে ৫ বার কর বাড়িয়ে সরাসরি গ্রাহকের কাছ থেকে ২৮.৫০ভাগ আদায় করা হতো। এবার আরো ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার ফলে গ্রাহকের কাছ থেকে ১০০ টাকায় ৩৩.৭৫ টাকার সাথে অপারেটরদের ওপর আরোপিত কর আদায় করা হবে প্রায় ৩০ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী দেশের একজন ভিক্ষুকও টেলিযোগাযোগ ব্যবহার করে। তাই, সরকারকে ভাবতে হবে, অতিদরিদ্র ব্যক্তি বা পরিবার যারা বর্তমানে উপার্জনহীন তাদের কাছ থেকে উচ্চ কর আদায় করা কতটুকু সমীচিন হবে। এ সেবায় এমনিতেই নৈরাজ্য চলছে, তার ওপর অতিরিক্ত কর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, সব থেকে দুঃখের বিষয় উৎসাহজনক সকলের জন্য ব্যবহারযোগ্য খাতকে তামাক, মাদক ও উচ্চ বিলাসী পণ্যের কাতারে রাখা হয়েছে। এ কর অব্যাহত থাকলে সরকারের রাজস্ব না বাড়লেও একটি অপারেটর আরো অধিক নৈরাজ্য সৃষ্টি করে মুনাফা লুটবে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটক আতুর ঘরে পৌঁছাবে। তাই, সরকারের কাছে আমাদের দাবি আরোপিত কর বাতিল করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *