৫০ লাখ নয়, ২ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে : ডা. জাফরুল্লাহ

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা সারাদেশ


ঢাকা: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, তার একটি সুচিন্তিত পদক্ষেপের জন্য। তিনি ৫০ লাখ পরিবারকে সরাসরি অর্থ সাহায্য করেছেন। কাজটি অত্যন্ত ভালো, তবে এ ৫০ লাখ লোক কারা, তার স্থানীয়ভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করা একান্ত প্রয়োজন। এ তালিকা প্রকাশ না করলে প্রধানমন্ত্রীর ভালো কাজটা ইঁদুরে খেয়ে ফেলবে। ৫০ লাখ নয়, ২ কোটি মানুষকে সরাসরি খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। ত্রাণ ঠিকমতো বিতরণ করা হচ্ছে কিনা এর জন্য একটি সর্বদলীয় কমিটি করা দরকার।’

শুক্রবার দুপুরের জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আদর্শ নাগরিক আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব ও পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ড. সাদত হুসাইনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দেখা যাচ্ছে না, এটি বড় লজ্জাজনক বিষয়। রাতের আঁধারে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে রাতের আঁধারের মতোই হাওয়া হয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে এর প্রতিকার করতে হবে, নাহলে আপনার ভালো উদ্দেশ্য এবং আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে না।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি বাংলাদেশে এক কোটি নিরন্ন পরিবারের কথা স্মরণ রাখতে হবে। তাদের মাসিক রেশন দেওয়া উচিৎ। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিমাসে ১০ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। আমি আরও বলেছিলাম আমাদের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এ ত্রাণ সহায়তা সবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হোক। খাদ্য সহায়তা মানুষের বাড়িতে পৌঁছে না দিলে সরকারের অন্য সব অনুশাসন মানা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব রোগী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা এটি শনাক্ত করা। রোগীর ওপর এ দায়িত্ব দেওয়া ঠিক কাজ না। পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে করোনা টেস্ট করানোর জন্য মানুষ একের পর এক হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমাদের গণস্বাস্থ্যের র‍্যাপিড কিটের যদি অনুমোদন আসে তাহলে প্রতিটি হাসপাতালেই করোনা টেস্ট করা সম্ভব হবে।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘মানুষকে কথা বলতে দিতে হবে। কথা বলতে দিলে সব কথা আপনার বিপক্ষে যায় না। এটি আসলে আপনার পক্ষেই যায়। হয়তো দু’চারটি ভুল তথ্য পাওয়া যেতেও পারে। তাতে কী আসে যায়? দু’চারজনের ব্যঙ্গ দিয়ে আপনার গায়ে ফোসকা পড়বে না।’

বাড়িভাড়ায় প্রণোদনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শহরে ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত লোক ভাড়া বাড়িতে থাকেন। বর্তমানে তাদের আয় নেই। তাই তারা বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না। একইসঙ্গে অন্য বিল পরিশোধ করতে পারছেন না। তাদেরও শতকরা ৫০ ভাগ প্রণোদনার টাকা দেন। বাকি ৫০ ভাগ বাড়ির মালিককে যখন আমাদের সুসময় আসবে তখন দেওয়া হবে।’

বাসাভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ এবং পানির বিল মওকুফের দাবিতে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরু, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, ভাড়াটিয়া পরিশোধের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, খেলাফতে মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান হেলাল, আদর্শ নাগরিক আন্দোলনের সহ-সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *