সাভার: সাভারে অন্তত ছয় জন পোশাক শ্রমিকের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। উপজেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৩৪ জন। সম্প্রতি পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার পর থেকে সংক্রমণের হার দ্রুত বাড়ছে বলে মনে করছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পোশাক কর্মীদের মাঝে সংক্রমণ ধরা পড়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সর্বত্র। স্থানীয়রা বলছেন পোশাক শ্রমিকরা এক সঙ্গে অনেকে কাজ করেন। তারা থাকেনও একসঙ্গে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি। এমন পরিস্থিতিতে সাভারও আশুলিয়া এলাকার সব পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেয়ার আবেদন জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লেখা চিঠিতে তিনি উপজেলার সব প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ কারখানা খুলার আগে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেও সরজমিন দেখা গেছে অনেক কারখানায় তা মানা হচ্ছে না। প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক স্প্রে করা এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকলেও শ্রকিমরা জানিয়েছে অন্য সব ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এতে চরম ঝুঁকিতে আছেন তারা। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সায়েমুল হুদা বলেন, সাভার-আশুলিয়ার কারখানাগুলো বন্ধ থাকাকালীন সময়ে আমরা সারা দেশের তুলনায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আক্রান্তের হার অনেটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম যা কারখানাগুলো খুলে দেয়ার পর হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। তাই করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও সংক্রমণ ঠেকাতে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার সকল তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রাখাসহ উপজেলার সকল প্রবেশপথ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছি। উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিবও ডা. সায়েমুল হুদা। উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো চিঠিতে তিনি বলেন, সাভারের প্রবেশদ্বারগুলো খুলে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের শিল্প কলকারখানা চালুর কারণে আমাদের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। এখনই সকল পোশাক কারখানা ও উপজেলার সকল প্রবেশপথগুলো বন্ধ করা না হলে এই এলাকায় করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
তিনি বলেন, সাভারে হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক কর্মস্থলে পাশাপাশি অবস্থান করার কারণে করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন। সেখান থেকে শ্রমিকের মাধ্যমেই সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। এই সংক্রমণ ঠেকাতে হলে এখনই পোশাক কারখানা বন্ধের পাশপাশি উপজেলার প্রপ্রবশপথগুলো বন্ধ রাখার জন্য জরুরিভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিলো যেখানে ৮ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। এর মধ্যে ৬ জনই সাভার পৌর এলাকার উলাইল মহল্লার বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক। উপজেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃৃত্যু হয়েছে।