বিশ্বের মহাবিপদে মানবতার কাঠগড়ায় দাঁড় করাল কুলাঙ্গারের দল

Slider জাতীয় টপ নিউজ নারী ও শিশু সম্পাদকীয়


রিপন আনসারী: বিশ্বের ইতিহাসে যখন মহাবিপদ পুরো পৃথিবীতে, ঠিক তখন বাংলাদেশের একদল কুলাঙ্গার, ভয়ঙ্কর বিভৎসতা দেখিয়ে বড্ড অসমেয় মহাবিপদে অপরাধের রেকর্ড ভেঙে আমাদের মাথাটা নীচু করে দিল। বাংলাদেশের অপরাধের গতি ও মাত্রা অতিক্রম করল ওই সকল কুলাঙ্গারের দল। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের অসহায় মানুষগুলোকে বিশ্বের সকল অসহায় মানুষদের কাছে ছোট করল এরা বড্ড বাজে ভাবে। আমাদের দেশের অপরাধ মানচিত্রে ধর্ষনের ঘটনা ঘটে। ধর্ষন, গণধর্ষন, মা মেয়ে ধর্ষন, এই পর্যন্ত ছিল আমাদের পৈশাচিকতার রেকর্ড। কিন্তু গতকাল বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে যে অমানবিক ও ঘৃন্যতম ঘটনাটি ঘটল, তা আমাদের অপরাধ মানচিত্রকে প্রসিদ্ধ করে দিল, তাও আবার মহাবিপদের সময়।

একজন বিদেশী নারী বাংলাদেশের একজন ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করে নিজের মাতুভূমি ছেড়ে আমাদের দেশে সুন্দর সংসার করার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে, এটা নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের ও দেশের মানুষের জন্য ভালোবাসার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিল। কিন্তু এক হায়েনার দল, অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে চলমান মহাবিপদের সময় মানুষ যখন মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করছে ঠিক তখন নরপিশাচের ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করে ইজ্জ্বত লুটে খুনের উৎসব করল। ছিঃ ছিঃ ছিঃ। মাকে ধর্ষন করল, মায়ের দুটি নাবালক মেয়েকেও ধর্ষন করল, এরপর মায়ের প্রতিবন্ধী ছোট শিশুটি সহ সকলকে গলা কেটে হত্যা করল, এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া লিখে প্রকাশ করা যাবে না। আমরা লজ্জ্বিত, আমরা ঘৃনিত, আমরা অপরাধী। কারণ এই ধরণের কুলাঙ্গার বাংলাদেশের নাগরিক। এদের পৈশাচিকতার পূর্বলক্ষন আমরা আঁচ করতে পারেনি।

আমাদের পরিবার, সমাজ ও দেশ বড্ড মসৃন। সরল মনে আমরা নিজেদের আপন করে পরিবার সমাজ ও দেশ বানাই। আমি অতি সহজেই দেশের জন্য, মানুষের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করতে পারি। দেশপ্রেমের জন্য আমরা সব দিতে পারি, আপনমনে।

আমরা ভাবতেই পারিনি এমন কান্ড করার মত সন্তান আমাদের গর্ভে জন্ম গ্রহন করেছে। বিশ্বের অপরাধ মানচিত্রে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা আছে কি না, জানা নেই। এই ঘটনা ঘটেছে আমাদের দেশে। আমরা বার বার লজ্জ্বিত। আমরা পারিনি বিদেশী একটি মেয়ের স্বপ্নঘেরা আমার দেশের একটি সুন্দর সাজানো বাগানকে সুরক্ষা দিয়ে সন্মান জানাতে।

বিশ্বের ইতিহাস ভঙ্গ করে যে দেশ মাত্র নয় মাসে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়,সেই সাহসী দেশের বীর মানুষদের মাঝে এমন কুলাঙ্গারের জন্ম হয় ভেবে আমরা লজ্জ্বিত। এই হায়েনার দল, বিশ্বের সকল দেশ ও মানুষ যখন প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক তখন ওই কুলাঙ্গারেরা নিজেদের জীবনের কথা নিজেদের কর্মের ফল বা অপরাধের ঘনত্ব না ভেবে একজন মাকে ধর্ষন করল। একই সময় মায়ের দুটি নাবালক মেয়েকেও ধর্ষন করল। এরপর মায়ের শেষ চিহৃ একটি ছোট এমনকি প্রতিবন্ধী শিশুটি সহ সকলকেই নৃশংসভাবে গলা কেটে জবাই করল। ছিঃ ছিঃ। এমন সন্তানের বাবা মা ও আত্মীয় স্বজন আমরা। ভাবতে ঘৃনা হয় আমাদের। আমরা অপরাধী। কারণ এমন জঘন্য অপরাধী আমাদের ঘরে জন্ম নিয়েছে অথচ আমরা টেরই পাইনি।

এই ঘটনায় বাংলাদেশ থমকে দাঁড়িয়েছে। চরম লজ্জ্বা পেয়েছি আমরা সকলেই। সরকার জনগন ও দেশ সবই আজ অসময়ে মানবতার কাঠগড়ায়। আমরা এখন ঘৃনিত ও অপরাধী মনে করছি নিজেদের, কারণ এমন জঘন্যতম হায়েনার জন্ম দিয়েছি আমরা। আমাদের এই অপরাধী সন্তানদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই যেমন পৈশাচিক ঘটনা ঘটিয়েছে, তার মতই ভয়ঙ্কর শাস্তি। আমরা সতর্ক ও সচেতন হওয়ার সুযোগ চাই। আমরা ভালো হতে চাই। আমরা আর এমন কুলাঙ্গার সন্তানের জন্ম দিতে চাই না, যদি আরো জন্ম হওয়া কেউ থেকে থাকে, তবে তাদের চিহিৃত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখতে চাই। আমরা ক্ষমা চাই। আমরা মুক্তিও চাই।

আশা করি, আমাদের সরকার, এই জঘন্যতম ও রেকর্ডভঙ্গকারী ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে স্বল্প সময়ে এমন শাস্তি দিক, যেন এই রকম আর কেউ থেকে থাকলে তারা দেশ ছেড়ে চলে যায় বা আত্মহত্যা করে আমাদের উদ্ধার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *