গাজীপুর: করোনা পরিস্থিতি গুরুতর আকার ধারণ করায় গাজীপুর জেলাকে অবরুদ্ধ(লকডাউন) ঘোষনা করেছে গাজীপুরের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এস এম তরিকুল ইসলাম।
আজ এক গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি এই লকডাউন ঘোষনা করেন। আদেশে বলা হয়, পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গাজীপুর জেলা অবরুদ্ধ থাকবে। তবে এই সময় জরুরী পরিসেবা, চিকিৎসা সেবা, কৃষিপণ্য ও খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ সংগ্রহ ও উৎপাদন ও পরিবহন এর আওতার বাইরে থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে মহাসড়ক ব্যাতিত জেলা ও উপজেলার যে কোন সীমানা দিয়ে প্রবেশ ও প্রস্থান নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা স্থল নৌপথেও বলবৎ থাকবে।
প্রসঙ্গত: ইতোপূর্বে গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর মহানগরে লকডাউন ঘোষনা করেছিলেন। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরোধীতার মুখে তা কার্যকর হয়নি।
এ আগে গাজীপুরের সিভিল সার্জন গণমাধ্যমকে বলেছেন, গাজপিুর জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১১জনের দেহে। অবশ্য এই বক্তব্য দেয়া আগে জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, ৬জন আক্রান্ত হয়েছে।
এই অবস্থায় গাজীপুর জেলার পুরো অংশে স্থল ও জলপথেও লকডাউন ঘোষনা করা হল।
প্রসঙ্গত: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শনিবারে আরো দুই জনের দেহে করোনাভাইরাস বা কোভিড ১৯ এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। দুপুরে ঢাকায় আইইডিসিআর যে নতুন ৫৮ জনের শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে কাপাসিয়ার আক্রান্তরা তাদের দুজন।
নতুন করে আক্রান্ত একজনের বাড়ী কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে। তার ৩১ বছর বয়সী, যে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। অপরজন ঘাগটিয়া ইউনিয়নের খিরাটি গ্রামের গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিসে কর্মরত। শনিবার সন্ধ্যায় তাদের বাড়িসহ আশপাশের কয়েক বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ আবদুস সালাম সরকার জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর এলাকা থেকে গত ৮ এপ্রিল ৫ জন যুবক উপজেলার কড়িহাতার রামপুর গ্রামে আসে। খবর পেয়ে শুক্রবার তাদের নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হলে তাদের মধ্যে এক যুবক করোনা পজিটিভ হয়। শনিবার বিকেলে আমরা তার পজিটিভ রেজাল্ট পাই। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিসে কর্মরত উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের খিরাটি গ্রামের এক যুবকের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি গাজীপুর বসবাস করলেও কাপাসিয়ায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল। আগামীকাল রবিবার আক্রান্ত দুজনের পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হবে। তাদের বাড়ী লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার উপজেলার ছোঁয়া এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেডের এক শ্রমিকে দেহে কাপাসিয়ায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন উক্ত কারখানা ও দস্যুনারায়ণপুর গ্রাম লক ডাউন ঘোষণা করে। শনিবার উক্ত কারখানার ৭৬ জনের এবং আক্রানন্ত যুবকের পরিবারের চারজনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।