করোনার বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে: কাদের

Slider জাতীয় রাজনীতি


ঘরে বসেই যে যার অবস্থান থেকে সচেতনতার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা’র রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। খবর বাসসের

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৯৭১ সালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা শত্রুর মোকাবেলা করে বিজয়ী হয়েছি। করোনা ভাইরাস মোকাবেলাও একটা যুদ্ধ। এ যুদ্ধে আপনাদের প্রধানতম দায়িত্ব ঘরে থাকা। আমরা সকলের প্রচেষ্টায় এ যুদ্ধে জয়ী হব ইনশাল্লাহ। ঘরে বসেই সচেতনতার মাধ্যমে করোনার বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলুন।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বরাবরের মতো এ দেশের মানুষের প্রতি সহানুভূতিপ্রবণ ও সংবেদনশীল হয়ে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণ দিয়েছেন। দেশের জনগণের একজন হয়েই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আশা করি, দেশের জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সংকট মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাঙালি জাতির নেতা হিসেবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পূর্ব প্রস্তুতি ও বর্তমান প্রস্তুতিসহ ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। করোনা সংকট মোকাবিলায় বিদেশ ফেরত যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা থেকে শুরু করে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা, হাসপাতাল প্রস্তুত ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহে সরকার কর্তৃক সম্পন্ন সকল কার্যক্রমের কথা তিনি তুলে ধরেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত সংকটের মুখে নিশ্চিত সমাধানে যেখানে সারা বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার সীমাবদ্ধতাকে জয় করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাস মোকাবিলাকে একটি যুদ্ধ ঘোষণা করে সবাইকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে, এই সংকট মোকাবিলায় তার সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। তিনি তার ভাষণে মিথ্যার ফানুস উড়াননি। তিনি অবাস্তব ও কল্পনাপ্রসূত প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি বাস্তবতার নিরিখে স্বাভাবিক জীবনের দরজায় কড়া নাড়া অনাকাঙ্ক্ষিত করোনাভাইরাসের সৃষ্ট সংকট মোকাবেলার রূপরেখা ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার প্রদত্ত দিক-নির্দেশনাগুলো ছিল নির্মোহ, নির্মেদ ও আশা জাগানিয়া। করোনাভাইরাসে সারা বিশ্ব গভীর সংকট ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জাতির অভিভাবক হিসেবে শেখ হাসিনা স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বুধবার সন্ধ্যায় এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দিক-নির্দেশনা দিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রদান করেছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, কতিপয় মহল বা কিছু ব্যক্তি সংকট ও সম্ভবনার কথা বিশ্লেষণ না করে বরাবরের মতো প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সমালোচনা করেছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত সংকট নিরসনে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে যেখানে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন সেখানেও তারা বিভেদের রাজনীতি করতে চায়।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাধারণ জনগণের একজন হয়েই গণ-দায়িত্ববোধ সৃষ্টির মাধ্যমে এই সংকটের মোকাবেলা করতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য সহায়তার কথা সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ৬ মাসের খাদ্য, নগদ অর্থ প্রদান এবং বিনামূল্যে ভিজিডি, ভিজিএফ ও ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। যার দ্বারা শ্রমিক কর্মচারিদের বেতন পরিশোধ করা হবে। এই পদক্ষেপগুলো আপদকালীন এই সংকট মোকাবেলায় স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা। দীর্ঘ মেয়াদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় বাজারে যোগান ও চাহিদার সামঞ্জস্য রেখে অর্থনীতির সচলতা কীভাবে ধরে রাখতে হয় সেটা শেখ হাসিনা বিগত ১০ বছরে তার সরকারের সময়ে করে দেখিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ওবায়দুল কাদের দেশের সর্বস্তরের জনগণকে এবং আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *