চুয়াডাঙ্গার বাজারে করোনা আতঙ্কের মধ্যে ঈদের ভিড়

Slider অর্থ ও বাণিজ্য খুলনা জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা

চুয়াডাঙ্গা: করোনার সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগছেন সবাই। এই অবস্থার মধ্যে শুক্রবার (২০ মার্চ) থেকে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, সেমিনার, মিটিং-মিছিল, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গণজমায়েতের আয়োজন না করার নির্দেশ দিয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। কিন্তু জেলার বাজারে গিয়ে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। বাজারে হ্যান্ডওয়াশ ও স্যানিটাইজার কেনার হিড়িকের পর এবার শুরু হয়েছে বিপুল পরিমাণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার পাগলামি।

চুয়াডাঙ্গার বাজার ঘুরে দোকানিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা আতঙ্কে চুয়াডাঙ্গার বাজারগুলোতে বেঁচা-কেনা হচ্ছে ঈদের চেয়েও বেশি। এতে করে বাজারগুলোতে রয়েছে প্রচণ্ড ভিড়। বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্য ও মুদি দোকানগুলোতে বেশি ভিড় রয়েছে। এ সুযোগে চাল, ডাল, পেঁয়াজসহ অনেক পণ্যের দামও কিছুটা বেড়ে গেছে। দাম-দরের দিকে খেয়াল না করে ইচ্ছা মতো কেনা-কাটা করছেন সবাই।

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেছেন, ‘বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যশস্যের মজুদ যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে ক্রেতা হিসেবে স্বাভাবিক ক্রয় করলে কোনো ধরনের সঙ্কট তৈরি হবে না। আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। শুক্রবার সকাল থেকে মনিটরিং আরও বাড়ানো হয়েছে। আমরা বাজারে মাইকিং করেছি। আলমডাঙ্গায় বেশি মূল্য রাখায় দুজনকে জরিমানা করা হয়েছে। কেউ যদি পণ্যের দাম বাঁড়াই আমরা ভোক্তা অধিকার আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

আতঙ্কের কারণে অনেকেই চাহিদার তুলনায় বাজার বেশি করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এটা একটি মারাত্মক অন্যায়। আমরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি, যাতে এ রকম কেউ না করে। একটা সাধারণ বিষয় বুঝতে হবে, যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়, তাহলে বাজার করে কী হবে? মানুষের এটা বোঝা দরকার। এটা অন্যায়। আমরা মনিটরিং করছি এবং কাল (আজ) থেকে আরও বেশি মনিটর করা হবে।’

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে চুয়াডাঙ্গায় বিদেশ ফেরত ১৩২ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে।

এদের মধ্যে ভারত, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, ইতালি, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে রয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৩৩ জন, জীবননগর উপজেলার ৩৮ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৩৬ জন ও দামুড়হুদা উপজেলার ২৫ জন।

এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা ইতালি ফেরত প্রবাসী সাব্বির আহম্মেদের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *