শারমিন সরকার: আমি জানি আমার মত আপনারাও নিজেকে নিয়ে চিন্তিত হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি চিন্তিত পরিবার এর নিরাপত্তা নিয়ে! আমি গত কয়দিনে আমার পরিবারের ঝুকি কমিয়ে আনার জন্য ঘরের সবার সাথে কথা বলে হোম পলিসি তৈরি করেছি এবং স্ট্রিক্ট ভাবে তা পালন করার চেষ্টা করছি। যা একটা লিস্ট এর মত করে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করলাম (যদিও আমার বিশ্বাস আপনারা ও ইতিমধ্যে নিজেদের গুছিয়ে এনেছেন)
আমাদের কাছে থাকা এখন পর্জন্ত তথ্য আনুসারে প্রধানত দুই ভাবে এই ভাইরাস আমাদের ঘরে ঢুকতে পারে তাই নিজের হাইজিন মেনে চলার পাশাপাশি এই দুই উপায় কমিয়ে আনার জন্য আমরা যে ভাবে কাজ করছি/করতে পারিঃ
১। ঘরের সদস্য বা অন্য কোন মানুষের মাধ্যমে ভাইরাস আসার সম্বভাব্য #ভাইরাস_কন্টাক্ট_পয়েন্ট কমিয়ে আনা
২। বাহির থেকে নিয়ে আসা কোনা খাবার/বস্তু/টাকা/পরনের কাপড় এর মাধ্যমে ভাইরাস আসার ঝুকি #তিন_স্থর_নিরাপত্তা ব্যবস্তার মাধ্যমে কমানো
#ভাইরাসঃকন্টাক্টঃপয়েন্ট কমিয়ে আনা
I. সম্ভব হলে ঘর থেকে একজন কে বের হওয়ার জন্য নির্ধারিত করা এবং নিশ্চিত করা যেন সেই একজন সব ধরনের হাইজিন ও সতর্কতা মেনে চলে।
II. চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রে বের হওয়া বাধ্যতা মুলক হলে সুধুমাত্র চাকুরীজিবি সদস্যই ঘরের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি পাবে এবং একই ব্যাক্তি বাহিরের সব ধরনের কাজ করবে!
III. যেহেতু ছুটা বুয়া বা ড্রাইভার এর লাইফ স্টাইল হাইজিন আমরা নিশ্চিত করতে পারছিনা না সুতরাং, যে কোন মুল্যে আপাতত উনাদের সার্ভিস নেয়া থেকে বিরত থাকা।
IV. নিজে বাজারে না গিয়ে যদি মাছ ও সবজি বাজারে কারো সাথে বাসায় দিয়ে যাওয়ার ব্যপারে ডিল করা সম্ভব হয় তাহলে আপাতত কিছুদিন বাজারে যাওয়া বন্ধ রাখা!
V. সেলুনে চুল কাটানো, পার্লারে যাওয়া বন্ধ রাখা।
VI. ফাস্ট এইড আইটেম যেমনঃ কমন পেইন কিলার, সাপোজিটর, থার্মোমিটার, খাবার স্যালাইন, এজমার রোগি থাকলে পর্জাপ্ত ইনহেলার, ডাইবেটিক্স রোগির জন্য ইনসুলিন অল্প পরিমান হলে ও ঘরে এনে রাখা (তাহলে বার বার ফার্মেসি যাওয়ার প্রয়োজন কমবে)
VII. জরুরি অবস্থায় সাময়িক সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বা গ্যাস না থাকলে আমাদের পরিবারের সদশ্যরা যেন বিপদে না পড়ে যায় সে জন্য কিছু অলটারনেটিভ ব্যবস্তা রাখি (মোম, কেরসিন, স্টোভ ইত্যাদি)।
VIII. আমরা যেভাবে সচেতন, আমাদের বাসায় থাকা পার্মানেন্ট গৃহ কর্মী ও দারোয়ান কে ও একিভাবে সচেতন করা ! অন্যথায় উনাদের অসচেতনতার ফল পুরো পরিবার কে নিয়ে ভোগ করতে হতে পারে।
IX. কোন, সিমটম দেখা দিলে প্রথমেই হস্পিটাল বা ডাক্তার এর কাছে না গিয়ে (ওখানে ভাইরাস এটাক হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু কম নয়) বাসায় প্রাথমিক চিকিথসা নিতে পারি এবং পারিবারিক ডাক্তার এর সাথে যোগাযোগ রাখা।
X. আপাতত বাসায় মেহমান (কাছের আত্তিয় সহ) আসা বন্ধ রাখা! নিজেরা ও কোথাও না যাওয়া।
২। #তিন_স্থর_নিরাপত্তা ব্যবস্তার মাধ্যমে কমানোঃ
I. বাহির থেকে যাই আসুক (সবজি, সুকনা খাবার, বিস্কুটের পেকেট, মাছ, মেডিসিন ইত্যাদি) প্রথমে দরজার পাশে থাকা ডেজিগনেটেড সাবান পানির গামলায়/বালতি তে ডুবিয়ে ধোয়া ।
II. সাবান পানি ধোয়ার পর নরমাল পানির গামলায় ধুয়ে তারপর জথাস্থানে রেখে দেয়া।
III. যে সব জিনিষ ধোয়া সম্ভব নয় (কিছু কিছু সবজি, ঔষধ ইত্যাদি) এগুলো কে আইসোলেসন এ রাখার জন্য ঘরে নির্দিস্ট কর্নার ঠিক করে ফেলা ও অপচনশিল দ্রব্য গুলো সেখানে ১২/২৪ ঘন্টা সময় রেখে দেয়া! এই সময়ে এগুলো কেউ টাচ করবে না। (যতটুকু জানি এই সময়ে ভাইরাস এমনিতেই মরে যাওয়ার কথা)
IV. মানিব্যাগ, চশমা, বাহির থেকে পড়ে আশা কাপর ঘরে ঢুকেই খুলে রাখার জন্য নির্ধারিত স্থান রাখা এবং ১২ ঘন্টা এভাবেই রেখে দেয়া। যেসব জিনিষ ধুয়ে ফেলা যায় দ্রুত ধুয়ে ফেলা।
V. এই ধোয়া মোছা বা রেখে দেয়ার কাজের শেষে খুব ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেয়া।
VI. অন্তত পক্ষে বিছানার পাশের জানালা বন্ধ রাখা যাতে ওপর তলার কারো কফ বা থুথু বাতাসে আপনার ঘরে না ঢুকতে পারে!
VII. বেশি বেশি ভিটামিন “সি” (কমলা/মাল্টা , লেবু ইত্যাদি) ও “ডি” জাতীয় খাবার খাওয়া।
জানি এই সব কিছু সঠিক ভাবে করলে ও নিরা পত্তা নিশ্চিত হবে না … তবু কিছুটা হলেও ঝুকি তো কমবে!!
পরিবারের জন্য কিছুটা ঝুকি কমানোও কিন্তু অনেক বর কিছু!
পুনশ্চঃ
যারা এই ধরনের প্রচার কে ভয় ছরানো বা আতংক ছরানো বলে মনে করেন তাদের জন্য বলছি, আতঙ্ক থেকে ও যদি সচেতন্তা বারে তবে এই মুহুর্তে হয়তো আতঙ্কই ভাল। অন্তত পক্ষে ২০ টা হাত ধোয়ার স্থান নিশ্চিত করে বিশাল জন সভা করার মত বড় ভুল করার সুযোগ আমাদের আর নেই।
ভাল থাকবেন সবাই