নায়িকা শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন- পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদনের উঠে এসেছে এ তথ্য। সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, ‘পিবিআইর তদন্তে সালমান শাহকে হত্যার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক কলহ ও মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’ এর পেছনে পাঁচটি কারণও উল্লেখ করেছেন তিনি। এর প্রথমটি সালমান শাহ ও চিত্রনায়িকা শাবনূরের ঘনিষ্ঠ অবস্থা।
শাবনূরকে নিয়ে পারিবারিক কলহের চিত্র তুলে ধরেছে পিবিআই। তদন্ত প্রতিবেদনে এফডিসিতে শাবনূরকে নিয়ে সালমানের স্ত্রীর সামিরার একটি ঘটনা তুলে ধরে হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সালমান শাহ’র স্ত্রী সামিরা হঠাৎ এফডিসির ডাবিং থিয়েটারে যান। সেখানে রেজা হাসমত পরিচালিত সালমান শাহ ও শাবনূর অভিনীত সিনেমার ডাবিং চলছিল। সামিরা সেখানে গিয়ে দুজনকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে রাগারাগি করেন। সেখান থেকে দ্রুত বের হয়ে বাসায় চলে আসেন সামিরা। প্রোডাকশন বয় আবুল হোসেন তাকে অনুসরণ করে পেছনে পেছনে আসেন। তবে সামিরাকে তিনি থামাতে পারেননি। এফডিসি থেকে সামিরা চলে যাওয়ার পর ডাবিং বন্ধ রেখে সালমানও বাসায় ফেরেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে সালামন শাহ’র সিটিসেলে একটি ফোন আসে। সালমান ফোন ধরে চিৎকার করে বলতে থাকেন, তাকে যেন আর ফোন না দেয়। কথা বলতে বলতে তিনি বাথরুমে চলে যান। বাথরুম থেকে বের হওয়ার পর সামিরার সঙ্গে ঝগড়া হয় তার।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদনের উঠে এসেছে এই তথ্য
ঝগড়ার এক পর্যায়ে সামিরা গভীর রাতে বাসা থেকে বের হয়ে যান বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, রাত ১২টার দিকে সালমানের সিটিসেলে ফের ফোন আসে। সামিরা বাসা থেকে বের হয়ে নিচে চলে যান। এসময় সালমান বাসার ইন্টারকমে ফোন দিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের নির্দেশ দেন সামিরা যেন বাসা থেকে বের না হতে পারে। সামিরার পেছনে পেছনে সালমানের ব্যক্তিগত সহকারি আবুল হোসেনও যান। বাসার নিরাপত্তাকর্মী ও আবুল হোসেন সামিরাকে বুঝিয়ে ওপরে নিয়ে আসেন। বাসায় ফিরে সামিরা কান্নাকাটি করেন। রাত আনুমানিক সোয়া ১২টার দিকে সালমানের সিটিসেলে ফের শাবনূরের ফোন আসে। সালমান উত্তেজিত হয়ে তার সিটিসেল ফোনটি আছড়ে ভেঙে ফেলেন। এমনকী সেসময় তিনি শাবনূরের কাছ থেকে উপহার পাওয়া একটি ফ্যানও ভেঙে ফেলেন। পরদিন সকালে গৃহপরিচারিকা মনোয়ারা বেগম ভাঙা ফ্যান ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেন। সামিরা ও সালমানের মধ্যে রাতে আরও ঝগড়া হয়।