মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের করা ২৬৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ এরই মধ্যে চড়েছে রানপাহাড়ে। যার বড় অবদান মুশফিকুর রহীমের। নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটি, মুমিনুল হকের সেঞ্চুরির পর- তাদেরকে ছাড়িয়ে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুশফিক। ইনিংসের শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকা মুশফিক, তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে গিয়ে পৌঁছেছেন নিজের ডাবল সেঞ্চুরিতে। প্রায় আট ঘণ্টার কাছাকাছি সময় ব্যাট করে ৩১৫ বল মোকাবেলা করে ২৮ চারের মাধ্যমে ডাবল সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন মুশফিক। টেস্ট ক্যারিয়ারে তার আগের দুইটি ডাবল সেঞ্চুরিই ছিলো উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে। এবারই প্রথম পুরোপুরি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নেমে দুইশ রানের গন্ডি পেরোলেন মুশফিক।
মুশফিকুরের ডাবল সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ২৯৫ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ।
আগের দিন জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে গুটিয়ে দেয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুরই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দুই ওপেনার সাইফ ও তামিম।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান ডানহাতি সাইফ। পরের ওভারে তামিমের ব্যাট থেকেও আসে দুই চার। মাত্র ৩ ওভারেই ১৮ রান করে ফেলে বাংলাদেশ।
কিন্তু চতুর্থ ওভারের শেষ বলে হালকা বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট এগিয়ে দেয়ার ভুল করে বসেন সাইফ। ফলে তার ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাভার হাতে। সমাপ্তি ঘটে সাইফের ১২ বলে ৮ রানের ইনিংসের।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আর বিপদ ঘটতে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তামিম ইকবাল। দুজন মিলে ৪ ওভার খেলে যোগ করেন ৭ রান। পরে দ্বিতীয় সেশনেও দারুণ ব্যাট করেন এ দুজন। পাল্লা দিয়েই নিজেদের রান বাড়াচ্ছিলেন শান্ত ও তামিম। মনে হচ্ছিল, দুজনই তুলে নেবেন ফিফটি।
কিন্তু দলীয় ৯৬ রানের মাথায় অফস্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন তামিম। সমাপ্তি ঘটে তার ৮৯ বলে ৪১ রানের ইনিংসের, একইসঙ্গে ভাঙে শান্তর সঙ্গে ১৫৯ বলে ৭৮ রানের জুটি।
তামিম না পারলেও বিরতির এক ওভার আগে ফিফটি তুলে নেন শান্ত। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করতে খেলেন ১০৮টি বল, হাঁকান ৬টি বাউন্ডারি। পরে বিরতির ঠিক আগের ওভারে মারেন আরও একটি বাউন্ডারি।
তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল হককে নিয়ে শান্ত গড়েন ৭৬ রানের জুটি। কিন্তু ৫০তম ওভারে এসে বোকার মতো আউট হয়ে বসেন শান্ত। অভিষিক্ত তিশুমার বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ১৩৯ বলে ৭ বাউন্ডারিতে গড়া শান্তর ৭১ রানের ইনিংসটি থামে তাতেই। তবে এরপর মুমিনুল আর মুশফিকুর রহীম দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ২১.২ ওভারের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থাকেন তারা। তৃতীয় দিনেও ব্যাট করেন প্রায় দেড় সেশন।
জিম্বাবুয়ের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল এই জুটি। মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহীমের ধৈর্যে কিছুতেই বাঁধ দিতে পারছিলেন না সফরকারি বোলাররা। ৬০.৪ ওভারে ২২২ রানের এই ম্যারাথন জুটিটি শেষতক ভাঙে মুমিনুলের আউটে।
এনলুভোকে তুলে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ হয়ে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ২৩৪ বল মোকাবেলায় তার ১৩২ রানের ঝকঝকে ইনিংসটি ছিল ১৪ বাউন্ডারিতে সাজানো।
বেশিদূর যেতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুন। ১৭ রান করে এনলুভোর দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। তবে মুশফিকের ধৈর্যে এখন পর্যন্ত চিড় ধরাতে পারেননি জিম্বাবুয়ের বোলাররা। লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে লিডটা বড় করেন। ৫২ করে আউট হন লিটন। তাইজুল অপপরাজিত থাকেন ১৪রানে।