মনডা কি চায় আর কইলাম না—রাষ্ট্রপতি

Slider জাতীয় টপ নিউজ বিচিত্র

ঢাকা: আমি জীবনে ফেল করেছি অনেকবার কিন্তু নকল করি নাই। পাশের কাউকে কিছু জিজ্ঞাসাও করি নাই । শোনা যায়, কতিপয় শিক্ষকরা নাকি নকল সপ্লাই দেয়, বাবা মারাও নাকি নকল দেয়। এর চেয়ে কলংকজনক ও হতাশাজনক ঘটনা আর কিছু নাই, তাদের কি ভাবে শায়েস্তা করতে হয়—-। তাই মনডা কি চায় —-আর কলাইম না, বুইঝ্ঝা নিতে হবে। কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় রাষ্ট্রপতি এ সব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এক শ্রেণির শিক্ষক রয়েছেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিটাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। অনেক সময় সান্ধ্যকালীন কোর্স ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে সপ্তাহব্যাপী অতি ব্যস্ত সময় কাটান বলেও মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। তিনি আরো বলেন, এ সমস্ত কাজ কর্মে তারা খুবই আন্তরিক। যত অনীহা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্ধারিত ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে এসব শিক্ষক মহোদয়গণ সিলেবাস শেষ করার ব্যাপারেও খুবই সিরিয়াস। তাই তারা একসাথে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা একটানা ক্লাস নেন। অনেক সময় ছুটির দিনে ছাত্র-ছাত্রীদের ডেকে একসঙ্গে কয়েক ঘণ্টা ক্লাস নেন। শিক্ষার্থীরা কতটুকু বুঝল বা কতটুকু গ্রহণ করতে পারলো, সে ব্যাপারে তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব বা মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।

আজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের ভাষণে প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ভিসিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী।
দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনাদেরকে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। আপনারা নিজেরাই যদি অনিয়মকে প্রশ্রয় দেন বা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন, তা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা কী হবে, তা ভেবে দেখবেন।০ সম্মানিত ভিসিদেরকে এ বিষয়টি কঠোরভাবে দেখতে হবে। প্রধান নির্বাহী হিসেবে প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না, তাও মনিটরিং করতে হবে।

প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বলেন, শিক্ষকতা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পেশা। আপনারা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তারা অত্যন্ত মেধাবী ও বিশেষ গুণে গুণান্বিত ও দক্ষ। তাই কোন ধরনের লোভ-লালসা বা অন্য কোন মোহের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পেশার মর্যাদকে সমুন্নত রাখবেন। তাহলেই শিক্ষার্থীরা আপনাদের আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করবে।

সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন এমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মীজানুর রহমান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর প্রথম সমাবর্তন করল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। সমাবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা আন্দোলনের পর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সমাবর্তন আয়োজনে কমিটি গঠন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সমাবর্তনের জন্য ২০১৯ সালের ১লা মার্চ থেকে নিবন্ধন শুরু হয়। সমাবর্তনে অংশ নেন ৩৬টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটের ১৮ হাজার ৩১৭ জন নিবন্ধিত সাবেক শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১ হাজার ৮৭৭ জন স্নাতক, ৪ হাজার ৮২৯ জন স্নাতকোত্তর, ১১ জন এমফিল, ৬ জন পিএইচডি এবং ১ হাজার ৫৭৪ জন সান্ধ্যকালীন কোর্সের সনদ নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *