রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, গ্র্যাজুয়েটদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের সব কল্যাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সময়ের চাহিদা ও জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার নিরিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সুখ সগৌরবে এগিয়ে যাবে এমনটি সবার প্রত্যাশা।
আজ শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে ভাষণে তিনি একথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের নকলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে নকলের বিভিন্ন কথাবার্তা শোনা যায়। আমার লজ্জা হয়, যখন শুনি শিক্ষকরা নকল সাপ্লাই করে। অনেক জায়গায় শোনা যায় ছাত্রদের মা-বাবা পর্যন্ত নকল সাপ্লাই করে। এর চেয়ে কলঙ্কজনক, দুঃখজনক, হতাশাজনক আর কিছু হতে পারে বলে আমি মনে করি না।
তিনি বলেন, আসলে তাদের কী করে শায়েস্তা করা যায়, এটা আমি ভাষায় বলতে পারছি না, কী তাদের বলবো। মনডা চায়.. আর কইলাম না, বুইঝা নিতে হবে। নকলের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশে বর্তমান সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দেশের মানুষ যেন সড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন মেনে চলে, ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করে। সেজন্য দেশের মানুষদের সচেতন করতে হবে তোমাদেরই। দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি তোমাদের মাঝে লালন করবে। বর্তমান সমাজে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে রুঁখে দিতে হবে।
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শিক্ষকতা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পেশা। আপনারা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তারা অত্যন্ত মেধাবী ও বিশেষ গুণে গুণান্বিত ও দক্ষ। তাই কোনো ধরনের লোভ-লালসা বা অন্য কোনো মোহের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পেশার মর্যাদকে সমুন্নত রাখবেন। তাহলেই শিক্ষার্থীরা আপনাদের আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, মনে রাখবেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট খরচের সিংহভাগই আসে সরকরি কোষাগার থেকে, আর কোষাগারে টাকা আসে আপামর জনগণের পকেট থেকে। তাই যে যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
শিক্ষকদের সান্ধ্যকালীন কোর্স ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এক শ্রেণির শিক্ষক রয়েছেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিটাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। অনেক সময় সান্ধ্যকালীন কোর্স ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে সপ্তাহব্যাপী অতি ব্যস্ত সময় কাটান। এ সমস্ত কাজ কর্মে তারা খুবই আন্তরিক।
এর আগে জবির ১ম সমাবর্তনে স্নাতক ১১ হাজার ৮৭৭ জন, স্নাতকোত্তর ৪ হাজার ৮২৯ জন, এমফিল ১১ জন, পিএইচডি ৬ জন, ইভিনিংয়ের ১ হাজার ৫৯৪ জন শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
পদক দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং সমাবর্তন বক্তা পদার্থবিজ্ঞানে একমাত্র এমিরিটাস অধ্যাপক অরুন কুমার বসাক বক্তব্য রাখেন।