মো: জাকারিয়া, গাজীপুর: ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গাজীপুর সদর উপজেলার কেশরিতা গ্রামে অবৈধভাবে চলমান লাক্সারী স্মার্ট ফ্যান ফ্যাক্টরীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নিহত ১০ শ্রমিকের কংকাল হওয়া লাশ দাফন হয়েছে। সম্প্রতি কংকাল সৃ্ষ্টিকারী কারখানা কর্তৃপক্ষ গাজীপুর শহরে নিজেদের বিলাসবহুল অফিসিয়াল ফ্ল্যাট ৩ কোটি টাকায় ক্রয় করেছেন। বর্তমানে ওই ফ্ল্যাটের নির্মান কাজ চলছে। বহুতল ভবনের তৃতীয় তলার ৪৬০০ বর্গফুটের এই ফ্ল্যাট ক্রয় করেছে লাক্সারী স্মার্ট ফ্যান কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, লাক্সারী স্মার্ট ফ্যান কারখানায় অগ্নিকান্ডে নিহত শ্রমিকদের তাদের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। গুরুতর আহত দুই শ্রমিক শহীদ তাজ উদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। এই ঘটনায় জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। মামলায় ৭জনকে আসামী করা হলেও ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন, জাহিদ হাসান ঢালী, খোরশেদ আলম, নাসির, ডাঃ জাহিরুল আলম ও শামীম।
রুজা ইলেকট্রিক কোম্পানী লিমিটেড এর আরেকটা অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রুজা হাই-টেক এটা ফ্যান কোম্পানির নাম। এম ডি- জাহিদ হাসান ঢালী, চেয়ারম্যান- ডাক্তার জহিরুল আলম। পরিচালক খোরশেদ আলম, নাসির ও শামীম। দেশের অন্যতম লাক্সারি ব্র্যান্ডের এনার্জি সেভিং বাল্ব, এলইডি বাল্ব, সকেট-সূইচ, সিলিং ফ্যান ইত্যাদি ইলেকট্রিক পণ্যের উৎপাদক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের রুজা ইলেকট্রিক কোম্পানী লিমিটেড।
জয়দেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জাবেদুল ইসলাম বলেছেন, মামলার আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। যে কোন সময় ভাল খবর দেয়া যাবে।
এদিকে এই প্রতিষ্ঠানের আরো কয়েকটি শাখার সন্ধ্যান পাওয়া গেছে। পুলিশের তদন্তের স্বার্থে স্পষ্টুগুলো বাঁধা থাকলেও জানা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানের নামে বেনামে প্রায় ৫/৬টি শাখা রয়েছে।
একটি গোপন সূত্র জানায়, কয়েক মাস আগে কয়েকজন লোক কেশরিতায় অবস্থিত দূর্ঘটনাকবলিত কারখানায় যায়। সেখানে গিয়ে অবৈধ ব্যবসা ধরে ফেলে দেনদরবার করে আংশিক মালিকানা লিখে নেয়। এরপর নতুন ও পুরাতন মালিক মিলে গাজীপুর শহরের রাজবাড়ি রোডে জেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়ের বিপরীতে একটি অফিসে নিয়মিত অফিস করেন। গত তিন মাস আগে নতুন মালিককে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর সরকারী মহিলা কলেজের বিপরীতে আবিদ প্লজায় নির্মানাধীন বহুতল ভবনের তৃতীয় তলা ক্রয় করেন। ভবন নির্মান শেষ হলে নতুন অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল বলে জানায় ওই সূত্র।
প্রশাসনের একটি গোপন সূত্র জানায়, কতিপয় লোক মিডিয়া ও পুলিশকে এই বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া না করার জন্য অনুনয় বিনয় করছেন। যে কোন মূল্যে মামলার গতি যেন ভিন্নখাতে প্রবাহিত হয় সে চেষ্টা চলছে অবিরত। এতে গণমাধ্যমেও বিষয়টি ফলাওভাবে প্রকাশ ও প্রচার হচ্ছে না। ফলে পুলিশও তেমন তৎপর নয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে জোর চেষ্টা চলছে বলে সূত্রের দাবী।