বর্তমান সরকার দেশের মানুষকে চাকরে পরিণত করেছে: মিনু

Slider জাতীয় রাজশাহী


রাজশাহী: গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল জিয়া চেরিটেবল ট্রাস্ট মামলার বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানী। এ জন্য নগরীর মালোপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে সকাল ৯টা থেকে রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা জর হতে থাকেন। এ পর্যায়ে গোটা মালোপাড়া জনসমুদ্রে পরিণত হয়। নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল সহকারে এসে অফিসরে সামনে জর হন এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হয় বিক্ষোভ সমাবেশ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। প্রদান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন

বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক রাসিক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন ও সদস্য সহিদুন্নাহার কাজি হেনা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন

এছাড়াও মহানগর জেলা বিএনপি’র সদস্য সৈয়দ মহসিন আলী, মিজানুর রহমান মিজান, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল হক রানা, জেলা বিএনপি’র সদস্য আনোয়ার হোসেন উজ্জল, তাজমুল তান টুটুল, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সভাপতি মনিরুজ্জামান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু ও মতিহার থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল, বর্তমান সভাপতি মাহফুজুর রহমান রিটন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউজ্জামান পরাগ, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিটু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুরাজ আলী, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো, মহানগর তাঁতী দলের সভাপতি আরিফুল শেখ বনি উপস্থিত।

আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট রওশন আরা পপি, অধ্যাপিকা সখিনা বেগম, অধ্যাপিকা সখিনা খাতুন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সামসাদ বেগম মিতালী, মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক সামসুন নাহার, নুরুন্নাহার, মুসলেমা বেলী, গুলশান আরা মমতা, রোজি ও জরিনা এবং মহিলা নেত্রী রীতা, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম জনি, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকি, রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ রাহী ও জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম কুসুমসহ মহানগর, থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সংগঠনের নেতাকর্মীগণ।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে মিনু বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী থেকে দেশকে এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতা ঘোষনা দিয়েছিলেন এবং যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর ঘোষনার পর থেকেই বাংলার মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় বসে দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেয়। বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্র ধ্বংশ করে ফেলে। সে সময়ে দেশের মানুষ চরম বিপদের মধ্যে ছিলেন। ১৯৭৫ সাল পরবর্তী সময়ে দেশকে দারিদ্রতা, রাহাজানি, খুন, গুম থেকে উদ্ধার করার জন্য এবং বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলা লক্ষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের হাল ধরেন। এরপর শুরু হয় উন্নয়ন। তিনি ঊনিশ দফা কর্মসূচীর ঘোষনা করেন। ঊনিশ দফা বাস্তবায়ন শুরু করে কৃষিতে বিপ্লব ঘটান। বিদেশের সাথে সুসম্পার্ক গড়ে তোলেন। সেইসাথে দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেন। কিন্তু এই উন্নয়ন আর বাংলার মানুষ বেশীদিন দেখতে পায়নি। বিপদগামী কিছু সেনা সদস্য তাঁকে খুন করেন। এরপর বিএনপি’র হাল ধরেন তাঁর সুযোগ্য স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ধীরে ধীরে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। সঙ্গে আওয়ামী লীগ থাকলেও বেইমানী করে এরশাদ এর সাথে আঁতাত করে ১৯৮৬ সালে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেণ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সময় থেকেই দেশবাসীর নিকট জাতীয় বেইমানে পরিণত হন বলে উল্লেখ করে মিনু।

তিনি বলেন, বেগম জিয়ার নেতৃত্বে দেশে অভুতপুর্ব উন্নয়ন স্বাধিত হয়। দেশের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করতেন। কিন্তু বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশের মানুষের উপর নেমে এসেছে নির্যাতন। তিনি বলেন, জোর করে ভোট জালিয়াতি, ডাকাতী ও রাতের অন্ধকারে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে জোর ভোট নিয়ে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্র্রী হয়েছেন। তাঁর দল ক্ষমতায় এসেছে। এখন দেশে চলছে খুন, গুম, ধর্ষন, দুর্নীতি, মিথ্যা মামলা ও বিরোধী দলকে দমনের কাজ। এই সরকার বাংলাদেশের মানুষকে চাকরে পরিণত করেছে। পুর্বের সেই রাজতন্ত্রের ন্যায় প্রজাদের নির্যাতন করছে। মাদক দিয়ে দেশকে ভরিয়ে দিয়েছে। মসজিদের শহর ঢাকাকে জুয়ার শহরে পরিণত করেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। এছাড়াও দেশেও টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অথচ বেগম জিয়া কোন প্রকার দুর্নীতি না করেও জেল খাটছেন। তিনি অসুস্থ হওয়া সত্বেও এই সরকার বেগম জিয়াকে জামিন দিচ্ছেন না। গতকাল ছিল তাঁর জামিনের শুনানী। কিন্তু আওয়ামী পন্থী বিচারক তাঁকে জামিন না দিয়ে আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। বেগম জিয়াকে জেলের মধ্যে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে এই সরকার। কিন্তু এই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী দিন থেকে এক দফার দাবী নিয়ে আন্দোলন শুরু করা হবে। আর এই আন্দোলনে সকলকে শরীক হওয়ার আহবান জানান তিনি।
উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ঘোষনা করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান। কেন্দ্র থেকে কর্মসূচি ঘোষনা না করলে রাজশাহী থেকে বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারী দেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *