‘বুলবুল’ বলে গেল ‘সুন্দরবন বাঁচাও, এটাই শেষ ঝড় নয়’

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি জাতীয় বাংলার মুখোমুখি সারাদেশ


ঢাকা: প্রতিবারের মতো এবারও প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের সামনে বুক পেতে দিয়ে বাংলাদেশকে বাঁচাল সুন্দরবন। সুন্দরবনে আছড়ে পড়েই দুর্বল হয়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় প্রায় দেড়শ কিলোমিটার গতিবেগে ধেয়ে আসা ‘বুলবুল’। সকলেই জানে এবং মানে, এই সুন্দরবন না থাকলে ঘূর্ণিঝড়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চল বিলীন হয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গত কয়েক বছরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে এমন আশংকাই করছেন বিশেষজ্ঞরা। বুলবুল চলে গেছে, কিন্তু এটাই শেষ ঘূর্ণিঝড় নয়।

কিন্তু মানুষ বড় অদ্ভুত এবং কৃতঘ্ন। ঝড় থেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই ভুলে যাবে সুন্দরবনের অবদানের কথা। আবারও গাছ কাটা হবে, বন উজার করা হবে, বন্যপ্রাণী হত্যা চলবে; বনের পাশে গড়ে তোলা হবে কল-কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র। তারপর আবারও ঘূর্ণিঝড় আসবে, সর্বশক্তি দিয়ে আবারও বুক চিতিয়ে লড়বে সুন্দরবন। কিন্তু যখন ক্ষয় হতে হতে এই বনের আর রুখে দাঁড়ানোর শক্তি থাকবে না, তখন কী হবে বাংলাদেশের? কী হবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের?

এর আগে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলা একইভাবে সুন্দরবনে বাধা পেয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সুন্দরবনের মতো এত বড় বন ধ্বংস করা সম্ভব না- এমন ধারণায় যারা বিশ্বাস করেন তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। যেভাবে বনের চারপাশে সভ্যতা নির্মাণের মহাযজ্ঞ চলছে, তাতে আর ৫০ বছরও লাগবে না সুন্দরবন ধ্বংস হতে। ঢাকা শহরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত উঁচু উঁচু দালানে বসে যারা সুন্দরবনের মৃত্যুসনদে সাক্ষর করেন, তাদের হয়তো কিছু হবে না। কিন্তু প্রকৃতির ভয়ংকর প্রতিশোধের শিকার হবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *