শিরিন ও কাজীর ভাতের গল্প”——-১ খায়রুননেসা রিমি

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সাহিত্য ও সাংস্কৃতি

শিরিন,আমার শরীয়তপুরের ছোট বোন।অসম্ভব গুণবতী একটা মেয়ে।রান্না যার সাধনা। মজার মজার সব রান্না করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আমাদের সবার লালা ঝরায়।ওর বানানো ভর্তার আইটেম দেখলে আমার মাথা ঘুরায়।মেয়েটা কিভাবে পারে এক হাতে এত আইটেম করতে!!!
আমি মুগ্ধ।

সেদিন ফেসবুকে পোস্ট দিল কাজীর ভাতের কথা বলে।আমাদের এলাকার এটা খুব জনপ্রিয় একটা খাবার।ওর ঐ পোস্ট দেখে ওর হাতের ভর্তা ও কাজীর ভাত খাওয়ার জন্য আমাদের সবার মন আঁকুপাকু করতে লাগলো।শিরিন হয়তো সেটা বুঝতে পেরেছে।বুঝতে পেরেই আমরা যারা ওর কাছের বন্ধু আছি তাদেরকে কাজীর ভাত ও ভর্তা উৎসবের দাওয়াত দিল।শিরিনের দাওয়াত পেয়ে আমি আনন্দে নাচতে লাগলাম।প্রায় ২২/২৩ বছর পরে কাজীর ভাত খাব।আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো একথালা কাজীর ভাত ও ভাতের চারপাশে গোল করে রাখা ১৩/১৪ রকমের মজার সব ভর্তা।

তারপর যখনই মনে হলো আমার আড়াইটা পর্যন্ত ক্লাস তখনি ফাঁটা বেলুনের মতো চুপসে গেলাম।পরক্ষণেই শিরিনকে মেসেজ দিয়ে জানালাম,
বোন আমার আড়াইটা পর্যন্ত ক্লাস আছে।তাই আমার আসা হবে না।শুক্রবার হলে আসা যেত।
শিরিন আমার মেসেজ সিন করেই সাথে সাথে ফোন দিল।

ঃআপা এইটা কেমন কথা আপনি নাকি আসবেন না।
ঃহ্যাঁ সোনা। এটাই ঠিক কথা।কারণ আমার আড়াইটা পর্যন্ত ক্লাস।বের হতে হতে ৩ টা বেজে যাবে।
ঃনা আপা আপনাকে আসতেই হবে।আপনি না এলে আমার এতসব আয়োজন ভেস্তে যাবে।প্লিজ আপু না করবেন না।আপনি না এলে আমার ভীষণ মন খারাপ হবে।আপনাকে আসতেই হবে।
ঃআচ্ছা দেখি কি করা যায়।
শিরিনের ফোন রেখে দিয়ে মহা চিন্তায় পড়ে গেলাম।এর মধ্যে বন্ধু রেজা ফোন দিল।
ঃরিমি তুমি,লিপি,রিংকু আমার অফিসে চলে আসো। সবাই মিলে একসাথে যাই।
ঃকি বলো তুমি! তোমার কি মাথা খারাপ?আমার তো আড়াইটা পর্যন্ত ক্লাস।কিভাবে আসবো?
ঃছুটি নিয়ে আসবে।
ঃনারে ভাই হবে না। ছুটি নিতে পারবো না।তবুও দেখি কি করা যায়।

বলেই ভাবতে লাগলাম। তারপর ক্লাসে গিয়ে ক্লাস নিয়ে একটু আগেই বেরিয়ে গেলাম।এরমধ্যে ছোট বোন শিরিনের ফোন, আপু আপনি আসছেন তো!
ঃহুম আসছি।পথে আছি।বলেই অনাবিলে উঠে পড়লাম।খুব অল্প সময়ের মধ্যে শিরিনের বাসায় পৌঁছে গেলাম। গিয়ে দেখি আমার আগেই শিরিনের এক বন্ধু পলি এসে বসে আছে।
শিরিন, আমি ও পলি আড্ডা জুড়ে দিলামএকটু পর পর ফোন করে বন্ধু রেজা ও লিপিদের খোঁজ নিলাম।
এদিকে বন্ধু রেজা আটকে গেলো তার ছেলের পেরেন্টস মিটিংএ।

লিপি ও লিপির বড় বোন রাবেয়া আপা লিপির নীল গাড়ীতে চড়ে রওনা দিলেন শিরিনের বাসার উদ্দেশ্যে। রেজার ছেলের পেরেন্টস মিটিং শেষ হলে আসার পথে বন্ধু রেজাকে তুলে নিল লিপির গাড়ীতে।গাড়ী চলছে দ্রুত গতিতে।হঠাৎ গাড়ী রামপুরার কাছাকাছি এসেই এক্সিডেন্ট করে বসলো।
তারপর…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *