ডেস্ক: পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসে সমর্থন দেয়া বন্ধ না করলে পাকিস্তান ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে যাবে। এ ছাড়া তিনি জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অবস্থানকে জোরালোভাবে সমর্থন করেন। বলেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে এখন নয়া দিল্লি একটি ইস্যুতেই আলোচনা করবে। তাহলো পাকিস্তান দখলীকৃত কাশ্মীর। এর আগে ভারতের সমাজকল্যাণ ও ক্ষমতায়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রামদাস আথাওয়েলে বলেছেন, যদি ভারতের সঙ্গে একটি যুদ্ধ এড়াতে চায় প্রতিবেশী দেশটি (পাকিস্তান) তাহলে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উচিত হবে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরকে (আজাদ কাশ্মীর) ভারতের হাতে তুলে দেয়া। এসব বক্তব্যের অর্থ কি তা নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ। তারা বুঝতে চেষ্টা করছেন কেন ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করায় পাকিস্তান খেপেছে। রাজনাথ সিং ও রামদাসের বক্তব্যের মধ্যে এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে, ভারতের দৃষ্টি এখন পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের দিকে। তারা ওই অংশকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়, এমনটা এখন তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট। এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছে অনলাইন জি নিউজে।
এমনই এক প্রেক্ষাপটে রাজনাথ সিং ভারতের সুরাটে ‘ভারতীয় বীর জওয়ান ট্রাস্ট’-এর এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন শনিবার। এ সময় তিনি বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রটি ১৯৭১ সালে ভেঙে দু’ভাগ হয়ে গেছে। যদি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি পাকিস্তানে অব্যাহত থাকে তাহলে এই দেশটিকে বহু খন্ডে বিভক্ত হওয়া থেকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। যদি পাকিস্তান সন্ত্রাসে সমর্থন দেয়া বন্ধ করতে না পারে, তাহলে এটা অস্বীকার করা যাবে না যে, এই দেশটি ভবিষ্যতে ভেঙে বহু খন্ডে বিভক্ত হবে।
রাজনাথ সিং তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অবস্থানকে শক্তভাবে সমর্থন করে বলেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি- যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো আলোচনা হতে হয় তা হতে হবে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর নিয়ে। তিনি আরো বলেন, আমি পাকিস্তানকে বলতে চাই যে, দেশভাগের সময় ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে। এটা তাদের জন্য সম্ভব হয়েছে যারা পাকিস্তান সৃষ্টি করেছেন। তাদের ছিল ধর্মের রাজনীতি। কিন্তু ভারত জাতি ও ধর্মের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ভারত বিশ্বাস করে মানবতা ও ন্যায়বিচারে।
সরাসরি পাকিস্তানকে আক্রমণ করে রাজনাথ সিং বলেন, ভারত যেসব উন্নয়ন ও অগ্রগতি করেছে তা কখনো পছন্দ নয় ইসলামাবাদের। ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান তা ভালভাবে হজম করতে পারেনি। তারা এ ইস্যু নিয়ে গিয়েছে জাতিসংঘে। তারা আন্তর্জাতিক এ সংগঠনের কাছে মিথ্যা বলেছে। পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন ইস্যুতে কথা বলছে যখন তার নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত নয়। রাজনাথ সিং বলেন পাকিস্তানের ভিতরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বেলুচ জনগণ, হিন্দু, শিখ, জৈন ও বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংগঠনের কাছে মানবাধিকার নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে মানহানির চেষ্টা করছে পাকিস্তান। কিন্তু তাদের সঙ্গে একমত হচ্ছে না কেউ।