মার্কিন সেনাবাহিনীতে বাংলাদেশি আফিয়া

Slider জাতীয় বাংলার সুখবর

ঢাকা: স্বদেশের মতো প্রবাসেও বাংলাদেশি নারীরা অদম্য। মার্কিন সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মেয়ে আফিয়া জাহান পম্পি (২০)। পরিবারের সঙ্গে ব্রুকলিনের চার্চ ম্যাকডোনাল্ডে থাকেন আফিয়া। মার্কিন সেনাবাহিনীতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ঠিক কত নারী রয়েছেন, তা সুস্পষ্টভাবে জানা যায়নি। থাকলেও মার্কিন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পদে বাংলাদেশি একজন নারীর যোগ দেওয়া নিঃসন্দেহে গৌরবের।

ছোটবেলায় মা-বাবার সঙ্গে অভিবাসী হয়ে আমেরিকায় আসেন আফিয়া। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার জমালপুর গ্রামে।

আফিয়ার মা নুরুচ্ছাবাহ পূর্ণিমা বলেন, ‘ছোটবেলায় আমাদের সঙ্গে সে আমেরিকায় আসে। এখানে এসে অধ্যয়নের পাশাপাশি নাচ, গান ও সাহিত্য চর্চা করে। সে নাচসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সাফল্যের জন্য বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছে।’

নিউইয়র্কের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন বিপার সদস্য আফিয়া সংগঠনটির সঙ্গে এক যুগের বেশি সময় ধরে জড়িত। বর্তমানে তিনি ফার্মিং ডেল স্টেট কলেজের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। তাঁর বাবা মেজবাহ উদ্দিন মিরসরাই অ্যাসোসিয়েশন এনএর সভাপতি।

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরে ব্যবসা করতেন মেজবাহ উদ্দিন। সাগরপারের এ মানুষ পরিবার নিয়ে জীবনের নোঙর ফেলেন নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে। প্রায় দু দশক আগে আমেরিকা এসে স্বপ্ন দেখছিলেন এ দেশটিকে একদিন জয় করবেন। মেয়ে আফিয়া মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর তাই বাবা মেজবাহ উদ্দিন স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ আনন্দিত। জানালেন, ‘আমেরিকা আমাদের অনেক দিয়েছে। এ দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে আমার মেয়ে নতুন এক স্বপ্ন-যাত্রা শুরু করেছে। আফিয়ার মা পূর্ণিমা আর দু-দশজন বাঙালি নারীর মতোই গৃহবধূ।’
মেজবাহ উদ্দিন জানান, প্রবাসী হওয়ার পর নিজে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নানা সাংগঠনিক কার্যক্রমে থেকেছেন। তিন মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। অন্য দু মেয়ে সাদিয়া ও পৃথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

আফিয়ার এ অর্জনে আপ্লুত মা নুরুচ্ছাবাহ বলেন, ‘আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।’

মা-বাবার মতোই নিজের কৃতিত্বে খুশি আফিয়া জাহানও। এ সম্পর্কিত এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমেরিকা আমাদের দেশ। এ দেশকে আমি আমার কাজ দিয়ে কিছু দিতে চাই। এ প্রত্যয় আমার শৈশব থেকেই।’

আফিয়া জাহান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ায় তাঁর প্রবাসী আত্মীয়-স্বজন সবাই আনন্দিত। একই এলাকার প্রবাসী মনজুরুল হক বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের এ উত্থান আমাদের অনুপ্রাণিত করছে।’

প্রবাসের মতোই আফিয়ার গ্রামের বাড়িতেও আনন্দের বন্যা বইছে। নিজ এলাকা বারইয়ার হাট পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে বলেন, ‘আমার নিজের এলাকার একটি মেয়ে আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা ও ক্ষমতাধর দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে, এটি আমাদের এলাকাবাসীদের জন্য অহংকারের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *