আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিতে ছাত্রীর আত্মহত্যা

Slider নারী ও শিশু

পিরোজপুর: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ায় হুমকিতে রুকাইয়া রূপা (১৬) নামের এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

রুকাইয়া স্থানীয় ভান্ডারিয়া সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত।

এদিকে আজ শনিবার দুপুরে রুকাইয়া রূপার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত তামিম খানের (১৮) বিচারের দাবিতে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেছে তার সহপাঠীরা। মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব কুমার হালদারসহ কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রী বক্তব্য দেন। বক্তারা তামিম খানকে গ্রেপ্তার করে তাঁর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তামিম বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই রুকাইয়াকে উত্ত্যক্ত করতেন। গত কয়েক মাস তিনি উত্ত্যক্ত করা বন্ধ রেখেছিলেন। তবে তিন দিন আগে থেকে মেয়েটিকে আবার উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন তামিম। গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে রুকাইয়া প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরার সময় তামিম তার পথ আটকে বলেন, তাঁর সঙ্গে প্রেম না করলে আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন। মেয়েটি বাড়ি ফিরে বাবাকে এ কথা জানায়। এরপর রুকাইয়ার বাবা রুহুল আমিন বাজারে চলে যান।

মেয়েটির মা শান্তা বেগম বলেন, সন্ধ্যার দিকে মেয়ে প্রতিদিনের মতো নিজের ঘরে দরজা আটকে ছিলেন। এভাবেই সে পড়াশোনা করে বলে মায়ের কোনো সন্দেহ হয়নি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে বাবা মেয়েকে ডাকাডাকি করলে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে যান। সেখানে খাটের ওপর মেয়েকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান এবং পাশে ঘুমের ওষুধের খালি খোসা পান। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সে মারা যায়। খবর পেয়ে ভান্ডারিয়া থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

রুকাইয়ার বাবা রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার মেয়ের ছবি ফটোশপ করে তামিম বিভিন্নজনের কাছে ছড়িয়ে দেন। রুকাইয়া এ কারণে আত্মহত্যা করেছে।’

ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে রুকাইয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বরিশালে পাঠানো হয়।

ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। তামিম খান ঘটনার পর পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *