স্বাদের ইলিশ বুঝার উপায়

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি জাতীয়

ঢাকা: ইলিশ কমবেশি সবারই পছন্দের একটি মাছ। সর্ষে ইলিশ, ইলিশ পোলাও, ইলিশ দোপেয়াজা, ইলিশ পাতুরি, ইলিশ ভাজা, ভাপা ইলিশ, স্মোকড ইলিশ, ইলিশের মালাইকারী – এমন নানা পদের খাবার এদেশে জনপ্রিয়।

সামুদ্রিক এই মাছটি ডিম পাড়ার সময় হলে ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে আসে। তারপরও সব জায়গায় পাওয়া ইলিশের স্বাদ এক নয়। অনেকেই জানেন না কোন ইলিশের স্বাদ বেশি, কোন ইলিশ নদীর আর কোনটাইবা সমুদ্রের।

মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগর কিংবা নদীর ইলিশ -দুটিই টর্পেডো আকারের। কিন্তু নদীর ইলিশ একটু বেঁটে , আর সাগরের ইলিশ হয় সরু ও লম্বা। তাদের মতে, নদীর ইলিশ বিশেষ করে পদ্মা ও মেঘনার ইলিশ একটু বেশি উজ্জ্বল। নদীর ইলিশ বেশি চকচকে এবং রুপালি হয়। অন্যদিকে সাগরের ইলিশ তুলনামূলকভাবে কম উজ্জ্বল হয়।

এছাড়া পদ্মা-মেঘনা অববাহিকার ইলিশ মাছের আকার হয় পটোলের মতো অর্থাৎ মাথা আর লেজ সরু ,পেটটা মোটা হয়।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ বিষয়ক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রহমান বলেন, সাগর থেকে ইলিশ যখন ডিম ছাড়ার জন্য নদীতে আসে, তখন নদীর প্ল্যাংটন বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী খাওয়ার কারণে ইলিশ মাছের শরীর বেঁটে ও মোটা হয়। তিনি জানান, এই খাবারের কারণেই ইলিশের শরীরে এক ধরনের চর্বি জমে, যা তার আকৃতিকে সাগরের ইলিশের চেয়ে আলাদা করে। এ কারণে স্বাদও ভালো হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিম ছাড়ার আগ পর্যন্ত ইলিশের স্বাদ বেশি থাকে। ডিমওয়ালা ইলিশে মাছের পেটি পাতলা হয়ে যায় এবং চর্বি কমে যায়। এ কারণে স্বাদ কমে যায়।

কোনটি ডিমওয়ালা আর কোনটি ডিম ছাড়া ইলিশ- এ নিয়ে অনেকে দ্বিধায় থাকেন। এ প্রসঙ্গে ড. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, সাধারণত আগস্ট মাসের পর থেকে শুরু হয় ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুম, সেটা চলে সেপ্টেম্বর -অক্টোবর পর্যন্ত। তার মতে, ডিমওয়ালা ইলিশের পেট মোটা এবং চ্যাপ্টা হয়ে থাকে। এছাড়া ডিমওয়ালা ইলিশের পেট টিপলেই মাছের পায়ুর ছিদ্র দিয়ে ডিম বেরিয়ে আসবে। আর ডিম ছাড়া মাছের পেট আলগা বা ঢিলা থাকবে।

মৎস্যবিজ্ঞানীরা বলছেন, ইলিশের খ্যাতি এর স্বাদের জন্যই। এ কারণে ছোট ইলিশ বা জাটকা কখনোই কেনা উচিত নয়। তাদের ভাষায়, ইলিশ মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী । এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম রয়েছে। এই মাছ খেলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে, মস্তিষ্কের গঠন ভালো হয় । সেই সঙ্গে রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং বাত বা আর্থারাইটিস কম হয়। এছাড়া এই মাছ খেলে বিষন্নতা বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারও কম হয়। সূত্র : বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *