ঢাকা: ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ এখন দেশজুড়ে। প্রতিদিনই ঢাকাসহ ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর। এসব প্রতিরোধে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চেয়েছেন চলচ্চিত্রের তারকারা। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ মানবিক বিবেচনায় সার্বক্ষণিক ডেঙ্গু রোগীদের পাশে থাকার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) চলচ্চিত্রশিল্পী, প্রযোজক, পরিচালকদের নিয়ে পরিচ্ছন্নতা ও মশা মুক্তি অভিযান উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী। আজ শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) চত্বরে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করে তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ চিকিৎসক মানবিক বিবেচনায় ডেঙ্গু রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ ইতিমধ্যেই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছে, প্রয়োজনে তারা বিনা খরচে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেবে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বহু লোক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অথবা নিজ নিজ বাসায় চিকিৎসা গ্রহণ করছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে প্রত্যেককেই নিজ নিজ বসতবাড়ির চত্বর এবং আশপাশ এলাকা পরিচ্ছন্ন করতে হবে। পাশাপাশি মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে, যাতে ভয়ংকর এডিস মশার বিস্তার না ঘটে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে এবং একটি স্বার্থান্বেষী মহল ভবিষ্যতেও গুজব ছড়ানোর চেষ্টা চালাবে—এমন দাবি করে তথ্যমন্ত্রী কোনো গুজবে কান না দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তারকাসহ চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতিজগতের শিল্পী-কুশলীদের এই অভিযান নিঃসন্দেহে জনমনে ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধি করবে, মানুষকে পরিচ্ছন্নতায় উদ্বুদ্ধ করবে।
অভিযানের সময় তথ্যসচিব আবদুল মালেক, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান উল আলম এবং শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, অভিনেত্রী অঞ্জনা, অরুণা বিশ্বাস, রোকেয়া প্রাচী, রোজিনা, দিলারা, খলনায়ক ডিপজল, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নতুন সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী, সাইমন, আঁচলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় এফডিসি থেকে একটি র্যালি বের হয়ে হাতিরঝিলের কিছু অংশ ঘুরে আবার এফডিসি প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এফডিসির সামনের রাস্তা পরিচ্ছন্নতায় মন্ত্রী নিজেই প্রথমে ঝাড়ু ও পরে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করার ফগার মেশিনও হাতে তুলে নিলে তারকা ও কর্মকর্তারা তাঁকে সঙ্গ দেন। এফডিসির ভেতরে ও বাইরে ঝাড়ু দেন শিল্পীরা।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। নিজেদের চারপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আমরা অনেকেই বারান্দায় টবে গাছ রাখি, বৃষ্টি হওয়ার পর সেখানে পানি জমে। বৃষ্টির পর সেখান থেকে বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করতে হবে। যারা হাই কমোড ব্যবহার করেন, তাঁরা ঢাকনা বন্ধ রাখবেন। বাথরুমে যেন পানি জমে না থাকে, সেদিক খেয়াল রাখতে হবে।’ তিনি শিল্পীদের উদ্যোগে নিয়মিত এফডিসি প্রাঙ্গণ পরিষ্কার রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।