হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমনীগঞ্জ গ্রামের এমদাদুল হকের পুত্র রাহুল (৬)।ফুটফুটে চেহারার অধিকারী।
স্থানীয় শিশুদের চেয়ে তাকে দেখতে বেশি সুন্দর মনে হয়। যে বয়সে অন্যান্য শিশুর ন্যায় পাড়ার ছেলে মেয়েদের নিয়ে খেলা ধুলায় মেতে উঠার কথা। সে বয়সে মাকে তার যর্থার্থ সম্মান ফিরে দিতে নিজ বাড়ীর সামনের সড়কে মা রেবিনা বেগমকে নিয়ে খোলা আকাশের নিজে সারারাত কাটিয়েছেন ওই শিশু। পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ীতে নিয়ে যেতে চাইলেও সে তার মায়ের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত মায়ের সঙ্গে থাকার পণ করেন শিশু রাহুল।
দুই দিন ধরে দাবী আদায়ে অনশনে থাকলেও তাদের খোঁজ কেউ রাখেনি। শুক্রবার রাতে উপজেলা রমনীগঞ্জ গ্রামে ইমদাদুল হকের বাড়ীতে গিয়ে এমনি দূশ্য চোখে পড়ে।
এমদাদুলের পরিবারে লোকজন শিশুটির সামনে তার মাকে মারধর করে তাড়িয়ে দিলেও অনশন ছাড়েননি তারা।
জানা গেছে উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের ইউনুছ আলীর মেয়ে রেবিনা বেগমের সঙ্গে ২০০৬ সালে একই উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমনীগঞ্জ গ্রামের মূত তরিব উদ্দিনের ছেলে এমদাদুল হকের সঙ্গে বিয়ে হয়।
সুখে দু:খে চলছিল তাদের সংসার। তাদের সংসারে রাহুল (৬) নামে এক ছেলে সন্তানও রয়েছে। কিন্তু পারিবারিক কারনে গত ৩ বছর ধরে সংসারে ঝগড়া বিবাদ শুরু হয়। মা ও বোনের চাপে সন্তানসহ স্ত্রীকে তার শশুরবাড়িতে পাঠান ইমদাদুল হক।
তখন থেকে অনেক চেষ্টাও সামাজিক একাধিকবার বৈঠক করেও কোন ফল না পেয়ে লালমনিরহাট জেলা জজ আদালতে মামলা করেন রেবিনা বেগম। কিন্ত তাতেও কাংখিত ফল না পাওয়ায় নিজ সন্তানকে নিয়ে অনশনে নামেন রেবিনা বেগম।
এ প্রসঙ্গে রেবিনা বেগম বলেন, নিজ সন্তানসহ আমার অধিকার আদায়ে অনশন করছি। মামলা চলাকালীন সময়ে আমাকে গ্রহণ না করে স্বামী এমদাদুল হক অন্যত্র বিয়ে করায় সন্তানকে নিয়ে বাড়ীতে আসি।কিন্তু স্বামী, শাশুড়ী ও ননদ মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে নিজ বাড়ীর সামনের সড়কে অনশন করছি। অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হলে আত্নহত্যা ছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই।
এমদাদুল হক উপজেলার বড়খাতা বাজারের হাজী মসজিদের সঙ্গে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে বিভিন্ যন্ত্রপাতির ব্যবসা করেন। এমদাদুলের মা আলেকজন নেছা বলেন,আমারা কেউ তাকে মারধর করিনি।ওই বউ মামলা করেছে তাই তাকে ঘরে উঠাব না।ওই বউ নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে তাই ছেলেকে অন্য জায়গায় বিযে দিয়েছি।
এমদাদুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অনাগ্রহ দেখান।
হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, মেয়ের পক্ষ থেকে কেহ কোন অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।