ভারতের আসাম থেকে উদ্ধার হওয়া ৩৩ বছর বয়সী ধর্ষিতা এক বাংলাদেশিকে অবশেষে দেশে পাঠানো হয়েছে। আসামে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনারের সহায়তায় গত শনিবার তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের মিরপুরের বাসিন্দা ওই মধ্যবয়সী নারী দীর্ঘদিন ধরেই মূত্রনালী সংক্রমণে ভুগছিলেন। এ সময়ই শেখ হিৃদি ওরফে আপন নামে ওই বাংলাদেশি নারীর এক ফেসবুক ফ্রেন্ড তার চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটিতে আসতে বলেন।
গত ১৯ জুন গুয়াহাটিতে নামার পরই ওই বন্ধুটি পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-এ বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু দার্জিলিং-এর পরিবর্তে ওই নারীকে নিয়ে যাওয়া হয় মেঘালয়ের শিলং-এ। আর সেখানেই ওই নারীকে যৌন নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ।
এরপর সেখান থেকে গুয়াহাটিতে নিয়ে এলে সেখানেও যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় ওই বাংলাদেশি নারীকে।
নারী পাচারকারীদের নিয়ে কাজ করা স্থানীয় একটি এনজিও’র কর্মকর্তা জোনালি দাস জানান, ‘২১ জুন ওই নারীকে কলকাতায় চিকিৎসা করার জন্য তাকে নিয়েই গাড়িতে ওঠেন ফেসবুক বন্ধুটি। ট্রেনের যাত্রাপথেই বরপেটা রোড রেলওয়ে স্টেশনের কাছাকাছি কোন একটি জায়গায় ওই নারী কিছুটা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন। তার যখন ঘুম ভাঙে তখন ট্রেনটি নিউ বঙ্গাইগাঁও রেলস্টেশনে এসে পৌঁছয়। ’
তিনি আরও জানান ‘ওই ট্রেনটি থেকে আপন নামে ফেসবুক বন্ধুকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি বাংলাদেশি নারীর কাছে থাকা ৩৭ হাজার রুপি, ৪৫০ মার্কিন ডলার এবং কয়েক লাখ রুপির গহনার হদিশও মেলেনি। ’
জোনালি দাস বলেন, ‘২২ জুন রেলওয়ে পুলিশ এবং এনজিও’এর যৌথ প্রচেষ্টায় ওই বাংলাদেশি নারীকে উদ্ধার করা হয়। এরপর গুয়াহাটি শহরে আমাদের একটি রেসকিউ হোমে আশ্রয় দেওয়া হয়। সেই থেকেই আমরা তাকে বাড়ি ফেরানোর প্রচেষ্টা করছিলাম। ’
বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সহকারী হাই কমিশনার তানভীর মাসুদের সহায়তায় গত শনিবার ওই নারীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয় বলেও জানান জোনালি দাস।
এ ব্যাপারে রেল পুলিশ সুপার এইচ.কে দাস বলেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী আমরা একটি ধর্ষণ ও চুরির মামলা দায়ের করেছি। অভিযুক্তের খোঁজেও অভিযান চলছে। ওই বিদেশি নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে এবং আদালতে তার গোপন জবানবন্দীও নেওয়া হয়। ‘
পুলিশের ধারনা অভিযুক্ত ওই ফেসবুক বন্ধু বাংলাদেশের নাগরিক এবং কর্মসূত্রে তিনি আসামে থাকেন। তার খোঁজে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ফেসবুক পেজে ওই ব্যক্তি নিজেকে গোপালগঞ্জ জেলার বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সদস্য হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সূত্রে খবর, পুলিশের প্রথম কাজ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি আসামে বৈধ নথি বা ভিসা নিয়ে বসবাস করছে কি না তা যাচাই করা। এছাড়া শিলং’এর যে হোটেলে তারা উঠেছিলেন সেখানকার নথিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।