শিল্পে বিনিয়োগ ও জমি ক্রয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


ঢাকা: আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আরও অবারিত করা হলো। নতুন করে শিল্প ও সেবা খাতে ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এর জন্য শিল্প স্থাপন করতে হবে হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে।

প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়, যারা উল্লেখিত হারে কর দিয়ে এসব খাতে যে কোনো অংকের টাকা বিনিয়োগ করবেন, তাদের আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করবে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাজেটে অবশ্য ‘কালো টাকা’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয়নি। এতে উল্লেখ করা হয় যাদের অপ্রদর্শিত অর্থ আছে কিন্তু বৈধ করা হয়নি তারা এ সুযোগটি নিতে পারবেন। দেশে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে ও নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রস্তাবিত বাজেটে।

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জমি ক্রয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকাভেদে প্রতি বর্গ মিটারে সর্বনিম্ম ৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা কর দিলে ক্রেতার আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না। এ প্রস্তাব কার্যকর হলে জমি ক্রয়ে ব্যাপকভাবে কালো টাকার বিস্তার ঘটবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

বর্তমানে ফ্ল্যাট ক্রয়ে ঢাকা ও সব সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটে নির্ধারিত কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল আছে। কিন্তু করের পরিমাণ বেশি হওয়ায় ক্রেতারা ফ্ল্যাট ক্রয়ে উৎসাহিত নন। ফলে নতুন বাজেটে এ খাতে বিদ্যমান সুযোগ অব্যাহত রেখে করে পরিমাণ এলাকাভেদে সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ থেকে সবোর্চ্চ ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়। এতে কম খরচে ক্রেতারা ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেকে যুক্তি দেখান কালো টাকা মূল ধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসতে হলে সাদা করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান হয়। এর বিপক্ষেও যথেষ্ট যুক্তি আছে। কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হলে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হন। তা ছাড়া এটি ন্যায় বিচারের পরিপন্থি বলে মনে করেন অনেকে। তবে কালো টাকার সুফলের চেয়ে কুফলই বেশি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে প্রথম এ ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো। প্রচলিত আয়কর অধ্যাদেশের ধারা ১৯ (এএএ) অনুযায়ী, প্রায়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ২০০৩-০৪ অর্থবছরের বাজেটে নির্ধারিত কর দিয়ে দুই বছরের জন্য যে কোনো শিল্পে বিনিয়োগে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেন। অবশ্য নানা সমালোচনা ও বির্তকের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে সুযোগটি বাতিল করা হয়। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পর বিদ্যমান আইনের সেই ধারা পুনরুজ্জীবিত করে ফের আগের সুযোগটি প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *