লালমনিরহাটে তামাক এখন বিসিক শিল্প নগরীর পণ্য

Slider রংপুর

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে যেখানে সরকার নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন সেখানে লালমনিরহাট বিসিক শিল্পনগরীর ভিতরে তৈরি হয়েছে তামাকের বেল তৈরির কারখানা।

আর এ বিষয়ে বিসিক কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও অবৈধভাবে সুবিধা পাওয়ায় গত দু’বছরেও বন্ধ করেননি এ কারখানাটি।

জানা যায়, বিসিক শিল্পনগরীর ভিতরে টুম্পা এগ্রো কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ নামে দরজায় লেখা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির ভিতরে প্রায় ১৫০ জন নারী-পুরুষ শ্রমিক দিয়ে প্রতিদিন তামাকের বেল তৈরি করা হচ্ছে।

আর বাহির থেকে এসে কেউ যাতে বিষয়টি বুঝতে না পারে সে জন্য সব সময় লাগানো থাকে প্রতিষ্ঠানটির মূল গেট।

তবে তামাকের বেল তৈরি করার সময় এখানকার মহিলা শ্রমিকদের শিশুদের আনা হয়।

এতে শিশুরা তামাকের গন্ধে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষ এবং শ্রমিকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই।

বিসিক শিল্প নগরীর ব্যবসায়ীরা জানান, তামাকের গন্ধে শিল্প নগরীর পরিবেশ অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিদিন তামাকের গাড়ী আসা যাওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মরত শ্রমিকদের সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন রোগে ভুগতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনেক বার বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক কে অবগত করা হয়। কিন্তু তিনি গত ২ বছরেও কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

ফলে অনেক কষ্টে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। যদি এ ভাবে একের পর এক অবৈধ পন্থায় তামাকের কারখানা তৈরি হয় তাহলে শিল্প নগরী থেকে ব্যবসা সরিয়ে নিতে হবে এমনটাই মনে করছেন শিল্প নগরীর ব্যবসায়ীরা।

তামাকের বেল তৈরির কারখানার ম্যানেজার শ্রী পরীক্ষিৎ চন্দ্র রায় জানান, গত ২ বছর ধরে এ শিল্প নগরীর ভিতরে প্রায় ১৫০ জন নারী-পুরুষ কাজ করছেন।

এখানে তামাক নিয়ে এসে ডালগুলো ছাটাই করে পাতাগুলোকে একত্রিত করে বেল তৈরি করা হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত মালিক এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।

লালমনিরহাট বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক আবু হোসেন জানান, তামাকের বেল তৈরির কারখানা সম্পর্কে তিনি অবগত রয়েছেন।

ইতোপূর্বে প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দিয়ে সর্তক করে দেয়া হয়েছে যে বিসিক শিল্প নগরীতে তামাকের কোন গোডাউন বা কারখানা দেয়া যাবে না।

প্রতিষ্ঠানটি আশ্বাস দিয়েছে খুব তাড়াতাড়ি তামাক সরিয়ে দেবেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও বিসিক শিল্পনগরীর ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, আমরা যে সকল প্লট বরাদ্দ দিয়ে থাকি তাতে কিছু শর্ত থাকে।

কেউ যদি সে শর্ত ভঙ্গ করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন তাহলে যখন এ সংক্রান্ত সভা হবে তখন বিষয়টি দেখবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *