ঢাকা: পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে রংপুর সরকারী চিড়িয়াখানাসহ আশেপাশের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে বসেছে মানুষের মিলন মেলা। ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করে সব বয়সি মানুষের ভিরে কানায় কানায় পুর্ণ এসব ঘোরাফেরার জায়গা। পাশাপাশি চলছে একে অপরের মাঝে শুভেচ্ছা বিনিময়।
সরেজমিনে রংপুর মহানগরীত অবস্থিত সিটি করপোরেশন পরিচালিত চিকলি পার্ক, তাজহাট জমিদার বাড়ী জাদুঘর, সরকারী চিড়িয়াখানা ও বিনোদন উদ্যান, টাউন হল, সেনাবাহিনী পরিচালিক শাশ্বত বাংলা ও প্রয়াস বিনোদন কেন্দ্র, কালেক্টরেট সুরভী উদ্যান, শিরিন পার্ক, খেয়াপার্ক, ডিসির মোড় বঙ্গবন্ধু চত্বর, পায়রনা চত্বর, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসসহ নগরীর বিভিন্ন মোড় এবং নগরীর বাইরে পীরগাছার দেবী চৌধুরানী বাড়ি, মন্থনা দেবোত্ত্বর ছোট স্টেট, বড় স্টেট, ইটাকুমারী রাজার বাড়ি, কাউনিয়ার তিস্তা সেতু, গঙ্গাচড়ার শেখ হাসিনা সেতু, বেসরকারী বিনোদন উদ্যান গঙ্গাচড়ার ভিন্নজগত, পীরগঞ্জের কবি হেয়াত মামুদের মাজার, আনন্দ নগর, বদরগঞ্জের অবসর, মায়াভুবন সহ বিভিন্ন সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মানুষের অভাবনীয় উপস্থিতি। ঈদের দিন বিকেল থেকে মানুষে মানুষে ঠাসা থাকছে এসব স্থান।
মহানগরীর জাদুঘর তাজহাট জমিদার বাড়ীতে কথা হয় দর্শনার্থী আছেফুল হুদা আসিফের সাথে। তিনি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসপি পড়ছেন। তিনি নয়া দিগন্তকে জানালেন এই জমিদারবাড়িটি সবুজ বেস্টিত, ফুলে ফুলে সুশোভিত। তাই ঈদে এখানে বেড়াতে আসা। এখানে মানুষে মানুষে একাকার। ভ্যাপসা গরম। সবাই ঘেমে একাকার। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্ধর্যসহ অন্য সব কিছুই মানুষের মাঝে হারিয়ে গেছে। তাই শুধুই মানুষই দেখছি। মানুষ দেখতেই ভালো লাগছে। অনেক পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হচ্ছে। তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছি।
রংপুর চিড়িয়াখানার সামন এবং ভেতরও এখন মানুষে মানুষে ঠাসা। এখানে কথা হয় শিবরাম স্মৃতি প্রি ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেনির শিক্ষার্থী আবরারের সাথে। সে জানালো আমার বাবা এনজিও’র কনসালটেন্ট। কখনও তার সময হয় না। এবার ঈদে বাবার ইচ্ছেতেই মায়ের সাথে চিড়িয়াখানায় এসেছি। অনেক কিছুই দেখলাম। সব থেকে আমার বেশী ভালো লাগছে এখানে শুধু মানুষ আর মানুষ।
রংপুর সিটি করপোরেশন পরিচালিত চিকলী বিলেও মানুষের অন্ত নেই। বিলের পানিতে বিভিন্ন রাইডে জলকেলি এবং বিলের পাড়ে বিভিন্ন রাইডে চড়ে এবং ঘুরে সময় কাটাচ্ছেন মানুষ। নানাবয়সি মানুষের মিলন মেলায় এই বিল কানায় কানায় পূর্ণ। স্পীড বোর্ডে কথা হয় নব দম্পতি সাদেকুল-রিপার সাথে। তারা নয়া দিগন্তকে জানালেন, বিলের পানিতে স্পীড বোর্ডে উঠে খুব ভালো লাগছে। সাঁতার জানি না। তবে আজকের এই স্পীডবোর্ড যাত্রায় সাঁতার জানার আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা জানান, ভয়মিশ্রিত এই জার্নিকে আরও বেশী ভয় করেছে। এত মানুষ স্পীড বোর্ডে উঠেছে যে না জানি কখন কার টার সাথে কার টা লেগে যায়।
রংপুর চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. জসিম উদ্দিন নয়া দিগন্তকে জানান. বিপুল পরিমান দর্শনার্থীদের যেন কোন ধরনের অসুবিধা না হয়, সেজন্য আমরা সবসময় সতর্ক আছি। নিরাপত্বার পাশাপাশি তার যেন স্বাচ্ছন্দে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরেফিরে চিড়িয়াখানার পশু পাখি দেখতে পারে সেজন্য আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি রেখেছি। তিনি বলেন, এবার ঈদের নামাজের পর থেকেই প্রচুর দর্শনাথী আসছে চিড়িয়াখানায়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলীম মাহমুদ নয়া দিগন্তকে জানান, দর্শনীয় স্থানগুলোতে প্রচুর মানুষ ভির করছে প্রতিদিন। তাদের নিরাপত্বার জন্য আমরা পোশাকি ও সাদা পোশাকি আইনশৃংখলাবাহিনী মোতায়েন রেখেছি। দর্শনার্থীরা যেন নিরাপদে দর্শনীয় স্থানে আসতে এবং বাসা-বাড়িতে ফিরে যেতে পারেন সেজন্য আইনশৃঙখলা বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।