এত দায়িত্ব দিলাম, ফেল করলি! মমতার তোপের মুখে অরূপ

Slider বিচিত্র

দলের খারাপ ফলের কারণ চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ায় তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জির তোপের মুখে পড়ছেন একের পর এক মন্ত্রী ও নেতা। তারা যে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেননি, দলের দুর্বলতাগুলো বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং শীর্ষনেতৃত্বকেও বাস্তব অবস্থা ঠিক মতো জানাননি, শুক্রবারের দলীয় বৈঠকে তা স্পষ্ট করে দেন মমতা।

এদিন ফলাফল পর্যালোচনার সময় তৃণমূলনেত্রী প্রথমেই ভর্ৎসনা করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। এছাড়াও সমালোচিত হন মন্ত্রী অসীমা পাত্র, তপন দাশগুপ্ত এমনকি বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলও।

এ ছাড়াও আরও একাধিক কেন্দ্রে স্থানীয় ও ভারপ্রাপ্ত নেতাদের কাজেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা।
উত্তরবঙ্গের যেসব জেলায় সংগঠনের অরূপ দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে হেরে গেছে তৃণমূল। তার হাতে থাকা হুগলির একটি এবং বর্ধমানের দুটি আসনে হেরেছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা।

এই ফলাফল উল্লেখ করে মমতা অরূপকে বলেন, “এতগুলো জেলার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, ভাল করে কাজ কর। যখনই জিজ্ঞেস করেছি, বলেছিস, সব ঠিক আছে। কিন্তু একেবারে ফেল করলি। ”

অরূপের দায়িত্বে থাকা দার্জিলিং সম্পর্কেও সব তথ্য তাকে জানানো হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিংসহ এই আসনগুলো সম্পর্কে তাকে সবসময় সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি। এই ব্যর্থতার জন্য তিনি অরূপকেই দায়ী করেছেন।

একইভাবে এদিন বীরভূমের জেলা সভাপতির নাম করেও অসন্তোষ জানিয়েছেন মমতা। বৈঠকে অনুব্রতের কাছে বীরভূমের বহু তৃণমূলের হারের উল্লেখ করে অনুব্রতের উদ্দেশে মমতা বলেন, “তোমার ওখানেও তো বহু জায়গায় আমরা হেরে গেছি। ভাল করে কাজ হয়নি। ”

এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে থাকা নদিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নদিয়ার রাণাঘাট আসন হেরে গেছে তৃণমূল। পার্থের কাছ থেকে ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব আগেই দেওয়া হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকে।

হুগলির হারে বিস্মিত মমতা এদিন জেলার দুই মন্ত্রীর কাছেও ব্যাখ্যা চান। জবাবে ধনেখালির বিধায়ক তথা মন্ত্রী অসীমা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত করে বলে ওঠেন, তাকে হুগলিতে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তাকে থামিয়েই মমতা তখন বলেন, এ কেমন নেতা, যিনি নিজের জেলায় ঘুরতে পারেন না।

মেদিনীপুর আসনে হারের উল্লেখ করে জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কাজেও অসন্তোষ জানিয়েছেন মমতা। মালদহ জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোলাম রব্বানি ও সাধন পান্ডেকে।

রাজ্য স্তরে এই আলোচনা সেরে আগামী সপ্তাহ থেকে জেলাভিত্তিক পর্যালোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। ৭ জুন প্রথম বৈঠকে তিনি হুগলির নেতাদের ডেকেছেন। তারপর প্রয়োজনমতো আরও সাংগঠনিক রদবদল করা হতে পারে।

এদিনের বৈঠকে দলের প্রচারের দায়িত্বও ভাগ করে দিয়েছন মমতা। মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্রকে দলের মুখপাত্র হিসাবে মনোনীত হয়েছেন।

ফের একবার দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নির্দিষ্ট দিনে তৃণমূল ভবনে বসে দলের কাজ করতে বলেছেন মমতা।

জেলা ও তার নীচেরতলায়ও নিয়মিত দলের অফিসে বসে জনসংযোগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *