বিতর্কিতদের নিয়ে এখনো হয়নি সিদ্ধান্ত, তদন্তে নেই গতি

Slider রাজনীতি

ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে থাকা ‘বিতর্কিতদের’ বহিষ্কারে ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছিলেন সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু সেই সময় পার হলেও এখনো সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন পদবঞ্চিত ও পদোন্নতি না পাওয়া নেতা-কর্মীরা। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অধিকতর তদন্তের পর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত হবে।

গত ১৩ মে ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের প্রায় এক বছরের মাথায় ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে নবগঠিত ওই কমিটিতে শতাধিক ‘বিতর্কিত’ স্থান পেয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাদের বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করে পদবঞ্চিত ও পদোন্নতি না পাওয়া নেতা-কর্মীদের একাংশ। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মধুর ক্যান্টিনে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের হামলার শিকারও হন তারা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিতর্কিতদের’ বাদ দিতে ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে নির্দেশ দেন। ওই দিন রাতেই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ‘বিতর্কিতদের’ বহিষ্কারে ২৪ ঘণ্টা সময় নেন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ছাত্রলীগের ঘোষিত কমিটির ১৭ জনের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাচাই-বাছাই করে তা চূড়ান্ত করা হবে। যদি তারা অভিযোগ থেকে মুক্তি পান তাহলে তাদের পদ থাকবে। তা না হলে তাদের পদগুলো শূন্য ঘোষণা করে যোগ্যদের সেখানে স্থান দেওয়া হবে। ’
তবে এই ঘোষণার পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বহিষ্কারের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।

বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে চাইলে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, বিতর্কিতদের মধ্যে কয়েকজন আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা প্রমাণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। তাই অধিকতর তদন্ত করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তদন্তের পরেই বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে পদবঞ্চিত ও কাক্সিক্ষত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা। এই অংশের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ। ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কারের কথা বললেও ৪৮ ঘণ্টা চলে গেছে; তারা তাদের কথা রাখেননি। আজ (গতকাল) সন্ধ্যায় আমরা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে দেখা করব। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলব। বিলম্বের কারণ জানতে চাইব।

এদিকে মধুর ক্যান্টিনে হামলার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার তিন সদস্যের ওই কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। সেই সময়সীমা বৃহস্পতিবার শেষ হলেও এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি কমিটি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ‘ওই হামলায় অন্য পক্ষটির (পদবঞ্চিত) কয়েকজনও উসকানি দিয়েছেন। তাই দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করা হবে। তাই কমিটিকে আরও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’ তবে ছাত্রলীগের বিগত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু জানান, তদন্ত কমিটি আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করেনি। যারা হামলার শিকার, তাদের সঙ্গে কথা না বলে কিসের তদন্ত? এই তদন্ত কমিটির ওপর তাদের কোনো আস্থা নেই বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *