মাশরুম চাষে আত্মকর্মসংস্থান গড়ে উঠছে পাহাড়ে

Slider গ্রাম বাংলা

পাহাড়ে মাশরুম চাষে গড়ে উঠছে আত্মকর্মসংস্থান, কমছে বেকারত্ব। দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে অনেকের আগ্রহ বেড়েছে মাশরুম চাষে। স্বাদে সুস্বাদু, চাহিদা বেশি। তাই লাভ বেশি।

ফলনও হচ্ছে বাম্পার।
শুধু রাঙামাটির বাজারে নয়, এখান থেকে বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এরই মধ্যে পাহাড়ে উৎপাদিত এই পুষ্টিকর এবং ওষুধি গুণসম্পন্ন সবজির নাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সব খানে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি শহর থেকে প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাঙাপানি এলাকা। এখানে কয়েকটি পাহাড়ি পল্লী রয়েছে। এ গ্রামের মানুষগুলো প্রায় সবাই আত্মনির্ভরশীল। কৃষি খামার, সেলাই বুননসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। তাদের নিজেদের উদ্যোগে প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে মাশরুম চাষ। শুধু মাশরুম চাষ করে এ গ্রামে অনেকেই এখন লাখপতি।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, মাশরুম চাষের জন্য আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। এছাড়া চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজলভ্য। বেকার যুবক-যুবতী এবং মহিলারা ঘরে বসেই এর চাষ করতে পারেন। অন্যান্য সবজির তুলনায় বাজারে এর দাম অনেক বেশি, এজন্য এটা চাষ করা অত্যন্ত লাভজনক। গ্রীষ্মকালে যে কোনো চালা ঘরের নিচে এবং বারান্দায় চাষ করা যায়। কেননা পাহাড়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুু মাশরুম চাষের জন্য উপযোগী।

রাঙাপানি এলাকার মাশরুম চাষী পলাশ কুশুম চাকমা জানান, মাশরুম চাষ অত্যন্ত লাভজনক। শখের বসে স্বল্প পরিসরে মাশরুম চাষ শুরু করেন তিনি। ফলন বাম্পার হওয়ার পর এ চাষের আগ্রহ বেড়ে যায় তার। এরপর ব্যাপক আকারে শুরু করেন মাশরুম চাষ। নিজের জমিতে দৌচালা একটি ঘরের মধ্যে গড়ে তোলেন মাশরুমের খামার। নিয়মিত পরিচর্যা করার পর ফলনের মাত্রা বাড়তে থাকে।

কুশুম চাকমার দেখাদেখি এ এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এখন মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। বাজারে চাহিদা বেশি তাই দামও মিলছে মনের মত। তাদের উৎপাদিত মাশরুম এখন সব বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, কুশুম চাকমা শুধু মাশরুম বিক্রি করে এখন লাখপতি। বাণিজ্যিক ভাবে পি ও টু (সাদা জাতের) মাশরুম এবং পিএসসি (ছাই রঙের) মাশরুমের চাষ করা হচ্ছে। চাষাবাদে কোন খরচ নেই বললেই চলে।

জমির প্রয়োজন হয় না। খড়ের বেডে মাশরুম চাষ সাধারণত দুধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রথম ১৭ থেকে ২০ দিন ওমঘর ঘরে তারপর ফসল উৎপাদনের জন্য চাষঘরে ২১ দিন থেকে ৪৫ দিন। এরপর মাত্র ৭-১০ দিনের মধ্যেই মাশরুম পাওয়া যায়।

কিন্তু বীজের অভাবে অনেকেই মাশরুমের চাষ বৃদ্ধি করতে পারছেন না। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাপক সম্ভাবনা থাকার পরও সরকারি পৃষ্টপোষকতার অভাবে এবং রাঙামাটি জেলার উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সাথে মাশরুম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয় না থাকার কারনে সম্ভাবনাময় মাশরুম চাষ সফলতা পাচ্ছে না।

যার ফলে মাশরুম চাষীদের চাহিদা অনুযায়ী কৃষি ঋণ পাওয়া, পর্যাপ্ত বীজ পাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ আপ্রু মারমা বলেন, পাহাড়ে মাশরুমের বিশাল চাহিদা রয়েছে। আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে বলে চাষীদের চাষ চাহিদা বাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *