স্বামী ‘নিখোঁজের’ জিডি করতে গিয়ে ধরা খেলেন স্ত্রী

Slider বাংলার মুখোমুখি সিলেট


সিলেট: তিন দিন ধরে স্বামীর ‘সন্ধান না পেয়ে’ সিলেটের কানাইঘাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলেন হোসনা বেগম (২৬)। তাঁর অসংলগ্ন কথায় সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বাড়িতে রক্তের দাগ পাওয়ায় আরও জেরার মুখে পড়েন হোসনা। একপর্যায়ে তাঁরই দেওয়া তথ্যে সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় স্বামী ফারুক আহমদের লাশ।

পুলিশ বলছে, পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার জের ধরেই হোসনা বেগম ও তাঁর প্রেমিক পরিকল্পনা করে ফারুক আহমদকে হত্যা করেছেন। এতে সহযোগিতা করেছেন হোসনার প্রেমিক মোস্তফার আরও দুই ভাই জহির ও আবদুল্লাহ। ঘটনাটি ঘটেছে কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের বাউরভাগ দ্বিতীয় খণ্ড গ্রামে।

হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর গত বুধবার সকালে ফারুক আহমদের (৩০) মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী গোরকপুর গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে হোসনা বেগমকে।

পুলিশ জানায়, ফারুকের স্ত্রী হোসনার সঙ্গে প্রতিবেশী মোস্তফার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি টের পেয়ে ফারুক তাতে বাধা দেন। এরই জেরে গত রোববার রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় ফারুককে গলা কেটে হত্যা করেন হোসনা বেগম, মোস্তফা, জহির ও আবদুল্লাহ। রাতেই লাশ গুম করতে পার্শ্ববর্তী গোরকপুর গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে লাশ ফেলে ঢাকনা লাগিয়ে দেন।

গত সোমবার থেকে ফারুক আহমদের কোনো সন্ধান না পেয়ে পরিবারের লোকজন হোসনা বেগমের কাছে সন্ধান জানতে চান। হোসনা তাঁদের জানান, রোববার ভোরে বাড়ি থেকে কাজের জন্য বের হয়ে ফারুক আর ফেরেননি। মঙ্গলবার পর্যন্ত না আসায় সন্ধ্যায় তিনি কানাইঘাট থানায় জিডি করতে যান। এ সময় হোসনা বেগমের অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আহাদ হোসনাকে থানায় রেখে তাঁদের বাড়িতে পুলিশের একটি দল পাঠান। পুলিশের সদস্যরা হোসনার বাড়িতে গিয়ে তল্লাশিকালে খাট ও মেঝেতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ দেখতে পান। সেখানে বেশ কয়েকটি পায়ের ছাপও দেখতে পান। বিষয়টি ওসিকে জানালে তিনি হোসনাকে জেরা করেন। এ সময় হোসনা স্বামী হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে সেপটিক ট্যাংক থেকে ফারুকের লাশ উদ্ধার করা হয়।

সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. মাহবুবুল আলম জানান, পুলিশের জেরার মুখে ও তদন্তে পরিষ্কার হয়, হোসনা আরও কয়েকজন মিলে ফারুককে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ হোসনা বেগমকে আটক করেছে। তাঁর স্বীকারোক্তিতে আরও তিনজনের নাম পাওয়া গেছে পুলিশ তাঁদের আটকের অভিযান চালাচ্ছেন। তিনি জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *