অবশেষে মুক্তি পেলেন মিয়ানমারের সেই ২ সাংবাদিক

Slider বাংলার সুখবর


ডেস্ক: অবশেষে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন মিয়ানমারের সেই দুই সাংবাদিক ওয়া লোন (৩৩) এবং কাইওয়া সোয়ে ও (২৯)। ২০১৭ সালে দেশটির সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধরা যখন রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংস নির্যাতন চালায় রাখাইনে, তখন অত্যন্ত সাহস নিয়ে তারা সেই নৃশংসতার রিপোর্ট করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষ তাদেরকে জেলে ঢোকায়। এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে বিশ্ব। অবশেষে প্রেসিডেন্টের বার্ষিক সাধারণ ক্ষমার অধীনে মুক্তি পেয়েছেন তারা। মুক্তি পেয়েই ওয়া লোন প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। বলেছেন, কখনোই তিনি সাংবাদিকতা ছাড়বেন না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

ওয়া লোন এবং কাইওয়া সোয়ে ও’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সাংবাদিক। ২০১৭ সালের আগস্টে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে তাদের রিপোর্ট কাঁপিয়ে দিয়েছিল চারদিক। রাখাইনে লাইন ধরে বসিয়ে কমপক্ষে ১০ জন মুসলিমকে হত্যা করা হয়। এ বিষয়ে তারাই রিপোর্ট করেন। এ জন্য অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট-এর অধীনে তাদেরকে অভিযুক্ত করে গত সেপ্টেম্বরে ৭ বছরের জেল দেয় দেশটির আদালত। তার আগেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয় ইয়াঙ্গুনের পাশেই একটি জেলে। সেখানে কমপক্ষে ৫০০ দিন অতিবাহিত করেন তারা। তাদেরকে জেলে পাঠানোতে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কিভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে মিয়ানমারে তা স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে। একই সঙ্গে দেশটির বহুল কাঙ্খিত গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

মুক্তি পাওয়ার পর বিবিসির সাংবাদিক নিক বিক’কে ওয়া লোন বলেছেন, আমাকে সাংবাদিকতা থেকে কোনো কিছুই বিরত রাখতে পারবে না। আমার পরিবার ও সহকর্মীদের দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি ও উদ্বেলিত। আমার নিউজরুমে ফেরার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছি না।

মিয়ানমারের নতুন বছর উপলক্ষে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বন্দিকে সাধারণ ক্ষমার অধীনে মুক্তি দেয়া হয়। এবারও কয়েক হাজার বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তার অধীনে মুক্তি পেলেন এই দুই সাংবাদিক। তারা গত মাসে জিতেছেন অভিজাত পুলিৎজার প্রাইজ। রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টিফেন জে আদলার তাই তাদেরকে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার ‘প্রতীক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার আমাদের সাহসী সাংবাদিকদের মুক্তি দিয়েছে, এ জন্য আমরা ভীষণ খুশি। তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তারা আরো বলেছে, এখনও বহু ডজন সাংবাদিক জেলে বন্দি আছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, অবিচারের মাধ্যমে জেলে বন্দি থাকা এ সাংবাদিকদের মুক্তি পাওয়াকে আমরা অভিনন্দন জানাই। কিন্তু এ সঙ্কট শেষ হয়ে যায় নি। আক্ষরিক অর্থে মিয়ানমারের বহু ডজন সাংবাদিক ও ব্লগার এখনও ভিত্তিহীন ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগের মুখোমুখি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *