বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট সদরে ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে উপজেলার রণজিৎপুর গ্রামে মাথার উপর গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে শাহানুর বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধু মারা গেছে। দুপুর থেকেই সুন্দরবনসহ বাগেরহাটের বিভিন্ন নদীর পানি ফুসে উঠেছে। দুপুর বলেশ্বর শরণখোলা উপজেলার বলেশ^র নদীর প্রবল স্রোতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বগী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বগী, উত্তর সাউথখালী, দক্ষিণ সাউথখালী, চালিতাবুনিয়া ও দক্ষিণ চালিতাবুনিয়া নামে ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুপুর থেকে বাগেরহাট জেলার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে ঝড়ো হাওয়া। গুড়ি-গুড়ি ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আতংকিত লোকজন বিকাল থেকেই জেলার ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার আগেই লোকজন দোকানপাঠ বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে।
জেলার সর্বত্র ঘূর্ণিঝড় ফণী আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে, সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চর, আলোরকোল, কটকা ও শ্যালার চরে অবস্থানরত বনকর্মী ও জেলেরা আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে রয়েছে। মোংলা বন্দরের পন্য ওঠানামা বন্ধ রেখে বন্দর চ্যানেল খালী করা হয়েছে। ঝড় পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়ার জন্য মোংলায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের ২১টি জাহাজকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত আনলে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবনের অসংখ বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হবার আশংকা রয়েছে। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সুন্দরবনে একটি বিরাট অংশ। ঝড়-জলোচ্ছাসে মারা যায় ১টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, অসংখ্য হরিণসহ অনেক বন্যপ্রাণী। বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়ের পর ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বন্টনের জন্য প্রায় ৪শ মেট্রিক টন চাল ও ৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারের পাশাপাশি উপকূলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।