বাগেরহাটে ৩ শিশুকে ধর্ষণ, ২ ধর্ষকসহ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ কারাগারে

Slider নারী ও শিশু

বাগেরহাটের রামপাল, ফকিরহাট ও সদর উপজেলায় ৩ শিশুকে ধর্ষনের ঘটনায় শুক্রবার রাত থেকে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এক মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ও দুই ধর্ষককে আটক করেছে।

আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সরাফপুর কারামতিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নিবাসে থাকা তৃতীয় শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষনের পর আলামত নষ্টে জড়িত অধ্যক্ষ শেখ ওয়ালিউর রহমান, ফকিরহাটের বাহিরদিয়া গ্রামে ৩ বছরের এক শিশুর ধর্ষক আরমান শেখ ও বাগেরহাট শহরের হরিণখানা ৯ বছরের এক শিশুর ধর্ষক তার সৎ পিতা আলমগীর হোসেন।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে সরাফপুর কারামতিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নিবাসে থাকা তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীর ধর্ষক মুদী দোকানী ফেরদাউস মোল্লাকেও পুলিশ আটক করে। আটক মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ও ৩ ধর্ষককে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর মধ্যে সরাফপুর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ শেখ ওয়ালিউর রহমান ও এই মামলার প্রধান আসামি ধর্ষক মুদী দোকানী ফেরদাউস মোল্লাকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে রামপাল থানা পুলিশ।
আদালত আগামীকাল রবিবার রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানীর দিন র্ধায্য করেছে। এদিকে, ধর্ষনে শিকার ৩ শিশুর ডাক্তারী (মেডিকেল টেষ্ট) শনিবার বাগেরহাট সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ আফজাল জানান, রামপাল উপজেলায় তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষনের ঘটনায় তার মামা আজিজুর রহমান বাদি হয়ে শুক্রবার ৪ জনকে আসামি করে নারী শিশু আইনে মামলা করেছে। মামলা দায়েরের পর ধর্ষক ফেরদাউস মোল্লা, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ শেখ ওয়ালিউর রহমানকে আটক করা হয়েছে। আটক দুই আসামীকে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার মহিলা হোস্টেল সুপারসহ অন্য দুই আসামিকে আটক করতে পুলিশের অভিযান চলছে।

শরাফপুর কারামতিয়া ফাজিল মাদ্রাসার হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করা তৃতীয় শ্রেনীর এক ছাত্রীর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে মাদ্রাসার সামনে মুদী দোকানী ফেরদাউস মোল্লা গত ১১ এপ্রিল রাতে মাদ্রাসা ছাত্রীটিকে ফুসলিয়ে দোকনে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ধর্ষণের আলামত নষ্ট করে অসুস্থ হয়ে পড়া ছাত্রীটির কোন চিকিৎসা না করিয়ে তড়িঘড়ি করে পর দিন শিশুটিকে তার মামা বাড়ী বাগেরহাটের ফকিরহাটে পাঠিয়ে দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। শিশুটি মামা বাড়ী থেকে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ্য হলে এক সপ্তাহ পর তার মামা আজিজুর রহমান বাদি হয়ে শুক্রবার ৪ জনকে আসামি করে রামপাল থানায় নারী শিশু আইনে মামলা দায়ের করেন।

ফকিরহাট উপজেলার বাহিরদিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ৩ বছরের এক শিশুটিকে ধর্ষণ করে আরমান শেখ নামের এক যুবক। পরে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে গেলে তার মা ফকিরহাট উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য লিয়াকত বিচারের আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপন করেন। পরে পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে শনিবার দুপুরে ধর্ষক আরমান শেখকে আটক করে। শিশুটির মা বাদী হয়ে ধর্ষক আরমান শেখকে আসামী করে শনিবার ফকিরহাট থানায় নারী শিশু আইনে মামলা করেছে।

বাগেরহাট শহরের হরিখানা এলাকায় ১১ বছরেরর শিশুকে ধর্ষনের অভিযোগে শনিবার দুপুরে আলমগীর হোসেন শেখ (৩৫) নামের এক সৎ পিতাকে আটক করেছে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ। শিশুটির মা ও আটককৃত আলমগীরের স্ত্রী বাদি হয়ে তার স্বামীকে এক মাত্র আসামি করে এই মামলা দায়ের করে।

বাগেরহাট মডেল থানার ওসি মাহাতাব উদ্দিন জানান সৎ কন্যাকে ধর্ষনের অভিযোগ এনে আটককৃত আলমগীর সেখের স্ত্রী বাদি হয়ে সদও মডেল থানায় নারী শিশু আইনে মামলা করেন। মামলায় তিনি স্বামী বিরুদ্ধে এজাহারে উল্লেখ করেছেন, গত মাসের ২৭ মার্চ থেকে চলতি মাসের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ওই শিশুটি সৎ পিতা আলমগীর তাকে ধর্ষন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *