নববর্ষে ঢাবি ক্যাম্পাসে বাঁশি, মুখোশ ও ব্যাগ নিষিদ্ধ

Slider টপ নিউজ

আগামী ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ-১৪২৬ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান-এর সভাপতিত্বে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আনন্দময় পরিবেশে বাঙালির এই প্রাণের উৎসব উদযাপনে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও আনন্দময় পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও শৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করে সতর্কতার সাথে নববর্ষ উদ্যাপনের জন্য উপাচার্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, অফিস প্রধানগণ এবং বিভিন্ন সমিতির প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

পরে সভার গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল সকালে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোন ধরণের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না।

তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। ক্যাম্পাসে নববর্ষের দিন সকল ধরনের অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নববর্ষের দিন নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করে তা মনিটরিং করার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। নববর্ষের আগের দিন ১৩ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোন ধরণের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোন ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেইট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন। নববর্ষের দিন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্যের পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগত ব্যক্তিবর্গ সোহওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদ সংলগ্ন ছবির হাটের গেইট, বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে প্রস্থানের পথ হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেইট, রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেইট ও বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট ব্যবহার করতে পারবেন। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশে-পাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে ৩৭ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এই কমিটির সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।

সভায় কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নববর্ষ উদ্যাপনের লক্ষ্যে ২টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এগুলো হচ্ছে শৃংখলা উপ-কমিটি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটি। ৪১-সদস্যবিশিষ্ট শৃংখলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং সদস্য-সচিব সহকারী প্রক্টর মো. আবদুর রহিম। ৫১-সদস্যবিশিষ্ট মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহ্বায়ক চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং সদস্য-সচিব সহকারী প্রক্টর মো. নাজির হোসেন খান। সভায় উপ-কমিটিসমূহকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সমস্ত কার্যাদি সম্পন্ন করে উপাচার্য মহোদয়কে অবহিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *